সুলতানা কামাল চক্রবর্তী এর জীবনী
biography of sultana kamal

সুলতানা কামাল চক্রবর্তী এর জীবনী-Biography of Sultana Kamal Chakraborty

সুলতানা কামাল একজন বাংলাদেশী মানবাধিকারকর্মী এবং রাজনীতিবিদ। 'মূর্তি না থাকলে মসজিদও থাকতে পারে না' মন্তব্য করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন সুলতানা চক্রবর্তী। মানুষ তাকে একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে জানে। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর আরেকটি বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি কবি সুফিয়া কামালে সন্তান।

কবি সুফিয়া কামালকে নারী জাগরণের কবি বলা হয়। মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি ইসলামী রীতি নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন। তার লেখনি, বক্তৃতা, বিবৃতি, কবিতা ও সাহিত্যের মধ্যে দিয়ে তিনি মুসলিম নারী সমাজকে ইসলামী রীতিনীতির বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন আজীবন।

জন্ম: ১৯৫০ সাল

জন্মস্থন: ঢাকা, পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ)

ছদ্মনাম: লুলু

পেশা: মানবাধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদ

জাতীয়তা: বাংলাদেশি

শিক্ষা: এমএ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিষয়: নারী অধিকার

সাহিত্য আন্দোলন: মুক্তিযুদ্ধ

উল্লেখযোগ্য পুরস্কার: জন হামফ্রে ফ্রিডম পুরস্কার, অনন্যা সেরা দশ পুরস্কার (১৯৯৫)

দাম্পত্যসঙ্গী: সুপ্রিয় চক্রবর্তী

সন্তান: দিয়া সুদেষ্ণা চক্রবর্তী

আত্মীয়: সুফিয়া কামাল (মাতা)

ওয়েবসাইট: www.askbd.org

জন্ম ও শিক্ষা

সুলতানা কামাল জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫০ সালে। তাঁর পিতা কামাল উদ্দিন আহমেদ এবং মাতা প্রখ্যাত ও জনপ্রিয় কবি সুফিয়া কামাল। সুলতানা কামাল লীলা নাগের নারীশিক্ষা মন্দিরে ভর্তি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকার আজিমপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁর স্বামীর নাম শ্রী সুপ্রিয় চক্রবর্তী। 

কর্মজীবন

সঙ্গীত কলেজে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন সুলতানা কামাল। তিনি বিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানীতে নিযুক্ত হন। ১৯৭৬ সালে তিনি সিলেটের খাদিমনগরে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। তিনি নেদারল্যান্ড থেকে ওমেন এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি হংকংয়ে ভিয়েতনামী ভাসমান লোকজনের উপর জাতিসংঘের আইনী পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন।"

তিনি ২০১৬ সাল পর্যন্ত আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ

১৯৭১ সালের মহান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সুলতানা কামাল কাজ করেছেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশ হাসপাতালে। আহত বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করবার জন্য স্থাপিত হাসপাতালটি গড়ে তুলবার সময় থেকে শুরু করে যুদ্ধ শেষ হবার সময় পর্যন্ত সুলতানা কামাল (লুলু), তার ছোটবোন সাঈদা কামাল (টুলু), বেশ কয়েকজন নারী-যুবকসহ লন্ডন প্রবাসী দুজন ডাক্তার (ডা. মবিন এবং ডা. জাফরুল্লাহ) অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। সুলতানা কামালের তেমন কোনো নার্সিং প্রশিক্ষণ ছিল না। তবে ছিল অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর অপার সাহস। সেবা আর ভালোবাসা দিয়ে তারা সুস্থ করে তুলেছেন আহত মুক্তিযোদ্ধাদের। দেশ স্বাধীন হবার পর তারা নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।

সুলতানা কামাল চক্রবর্তী এর জীবনী
আবদুল মান্নান তালিব