আইনুদ্দীন আল-আজাদ (রহঃ) এর জীবনী-Biography of Ainuddin Al-Azad (RA)
Ainuddin Al-Azad (RA)

আইনুদ্দীন আল-আজাদ (রহঃ) এর জীবনী-Biography of Ainuddin Al-Azad (RA)

নাম:আইনুদ্দীন আল-আজাদ (রহঃ)

ডাক নাম:আজাদ

বাবার নাম: জনাব মোঃ শমসের আলী

মায়ের নাম: নভিরুন্নেসা

জন্ম: ১ লা মার্চ ১৯৭৩

ধর্ম: ইসলাম

জন্মস্থান: কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ

বর্তমান বয়স: ৪৯ বছর

জাতীয়তা: বাংলাদেশী

নাগরিকত্ব: বাংলাদেশী

পেশা: ইসলামিক স্কলার

উচ্চতা: ৬.১ ইঞ্চি

চুলের রঙ:  কালো

চোখের রঙ: কালো

সন্তান: ছেলে (আসাদুল্লাহ গালিব),মেয়ে (তুফফা আজাদ রুহি)

মৃত্যু: ১৮ জুন শুক্রবার ২০১০

ইউটিউব: https://www.youtube.com

ফেসবুক: https://www.facebook.com

হাজারো অমর সুরের স্রষ্টা, অসংখ্য গানের কারিগর মাওলানা আইনুদ্দীন আল আজাদ। তার সুর ও সংগীত দেশের সীমানা পেরিয়ে সুদূর মানচিত্রের লাখো বিশ্বাসী ও বিপ্লবীর হৃদয়ে বেঁচে থাকলেও আজ তিনি পৃথিবীর বুকে বেঁচে নেই। মাওলানা আজাদ ছিলেন এদেশে জনপ্রিয় নতুনধারার ইসলামী সংগীতের স্থপতি পুরুষ।

জন্ম

আইনুদ্দীন আল-আজাদ (রহঃ ১৯৭৭ সালের ০১ মার্চ ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম  জনাব মোঃ শমসের আলী ও মাতা নভিরুন্নেসা। তিনি ভাই বোনদের মাঝে পঞ্চম।

শিক্ষা জীবন

তিনি প্র্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন মকতবে। গ্রামের মকতবেই মাওলানা আজাদের পড়ালেখা শুরু হয়। এরপরে গ্রামের এক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে ইসলামি শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহে ১৯৯১ সালে ঝিনাইদহ উত্তর কাষ্টসাগর দাখিল মাদরাসায় ভর্তি হয়ে সেবছর দাখিল পরীক্ষা দেন। ১৯৯৩ সালে ছারছিনা দারুস সুন্নাহ আলিয়া মাদরাসা থেকে আলিম। ১৯৯৫ সালে ঝিনাইদহ সরকারী কে সি কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে বাংলা সাহিত্যে অনার্স। ১৯৯৬ সালে মাগুরা সিদ্দিকিয়া সিনিয়র মাদরাসা থেকে ফাজিল ও ২০১২ সালে ঢাকা সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়া থেকে কামিল সম্পন্ন করেন তিনি।

কর্মজীবন

মাওলানা আজাদ এর আধ্যাত্মিক গুরু ছিলেন চরমোনাইর পীর আল্লামা সৈয়দ ফজলুল করীম রাহিমাহুল্লাহ। তাঁর সাথে সম্পর্কের ফলে তিনি ইসলামী রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং উদ্যম ও বিশ্বস্ততার কারণে অল্পদিনেই সবার কাছে প্রিয় ও আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। দেশব্যাপী অপসংস্কৃতির সয়লাব এবং কিশোর ও তরুণ সমাজের অবক্ষয় রোধে তিনি কাজ শুরু করেন। গান-বাদ্য ও উদোম নৃত্য-গীতের মোকাবেলায় তিনি শুদ্ধ ও নির্মল গজল-সঙ্গীত পরিবেশন করতে শুরু করেন। পাশাপাশি ওয়াজ-নসীহত, বক্তৃতাও করতে থাকেন। ধীরে ধীরে ইসলামী সংস্কৃতির সেবাকেই তিনি কর্মপেশা রূপে গ্রহণ করেন।তাঁর সুরে ও কথায় অসংখ্য মানুষ মুগ্ধ হয় এবং দেশে-বিদেশে তার অনেক ভক্ত তৈরি হয়। হাজারো মানুুষের ভক্তি ও ভালবাসায় সিক্ত হয়ে পূর্ণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন। তৃণমূল পর্যায়ে সুস্থ সাংস্কৃতিক ভিত্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২৮ মে ২০০৪ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’। যাতে সারা দেশের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বরের মতো বিশেষ দিবসসহ বিভিন্ন সময় তিনি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। গজল ও ইসলামী সঙ্গীতের তাঁর মোট ২২টি ক্যাসেট বের হয়েছিল। এছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইন ও প্রচ্ছদ তৈরির সৃষ্টিশীল কাজও তিনি করতেন। তার স্মরণে আজকের দিনটিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে সরন করছে কলরবসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।

সংগ্রাম ও সংগঠন:

‘বিপ্লব মানে জীবন দেয়া বসে থাকা নয়/সে কোনোদিন আসবে না রে করো যদি ভয়’ এবং ‘তোমরা কেউ কি আছো জীবন দেবে খোদার পথে/জীবনের সব বন্ধন সকল মায়া ভুলে যেতে/তোমরা কেউ কি আছো’ এমন সব বিপ্লবী সংগীতের রচয়িতা মাওলানা আজাদ সংগ্রামের চেতনায় তাড়িত হয়ে মফস্বল ছেড়ে ১৯৯৩ সালে ঢাকায় চলে আসেন।

মসজিদের শহরে এসে সুরের বিলাল হয়ে তিনি গাইতে থাকেন বিপ্লবের গান। ইতোপূর্বেও তিনি গেয়েছেন, তবে একা। এবার তিনি কোরাস ধরলেন। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের এই অগ্রসেনানী ইসলামি সমাজ বিপ্লবের প্রত্যাশায় ১৯৯২ সালে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। দীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে তিনি তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিভিন্ন দায়িত্বও পালন করেন। পর্যায়ক্রমে ১৯৯৮-৯৯ সেশনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক, ২০০০-২০০১ সেশনে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ইশা ছাত্র আন্দোলনের দলীয় সংগীত, ‘আমরা নবীন আমরা তরুণ আমরা নওজোয়ান/ওড়াব এই ধরার বুকে তাওহিদী নিশান’ তাঁরই কলমের সোনালী প্রসব।ইসলামি সমাজ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় হামলা-মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। সকল জুলুমের নাগপাশ ভেঙে তিনি গেয়ে উঠেছিলেন, ‘কী হবে বেঁচে থেকে অযথা বিদ্যা শিখে/ যদি না গড়তে পারি শোষণবিহীন সমাজটাকে

’২০০০ সালে তৎকালীন সরকারের ইসলাম বিরোধিতার প্রতিবাদ করায় ইশা ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় কমিটির ১১ জনের মধ্যে তিনিও কারান্তরীণ হয়েছিলেন। কারাগারের অচলায়তন তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি, রূদ্ধ কারা প্রকোষ্ঠে বসেই লিখেছিলেন, ‘তোমাদের তরে আমার একটি অনুনয়/বাতিলের প্রাসাদ যেন উঁচু নাহি রয়’।

রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক

আইনুদ্দীন আল আজাদ ইসলামী রাজনীতির চর্চা জোরালো ভাবে করতেন। ছাত্র জীবনে ১৯৯৪ সালে তিনি ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সদস্য হন। এক সময় তিনি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। ছাত্র জীবন শেষে তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একজন নিষ্ঠাবান দায়িত্বশীল হন এবং তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন সম্পাদক হন। তিনি শুধু সংগীত শিল্পীই ছিলেন না, তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, ক্যালিওগ্রাফিকার, ওয়ায়েজ ও ছিলেন।

তিনি ২০০৪ সালে জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরব প্রতিষ্ঠা করেন।

তাঁর প্রথম প্রকাশিত এলবাম হলো ''দূর্নিবার" আর এই এলবামের প্রথম সংগীত "আয় মুজাহিদ আয় ছুটে আয় দ্বীনের পথে জীবন বিলায়".এব তাঁর শেষ এলবাম ছিল "বন্ধু".তার কণ্ঠে গাওয়া সর্ব শেষ গানটি ছিল "রঙিন এই পৃথিবী ছাড়িতে হইবে সাধের এই দেহ মাটিতে খাইবে."।

তাঁর কথা,সুর ও কন্ঠে মোট এলবাম সংখ্যা ২২ টি।

মৃৃত্যু

১৮ জুন ২০১০ ইংরেজি (৫ রজব, ১৪৩১ হি.) শুক্রবার নাটোরের লালপুরে তিনি এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন।

বাংলাদেশের সেরা ১০ অভিনেত্রী
আসাদুজ্জামান নূর এর জীবনী - Biography of Asaduzzaman Nur
আল্লামা তারেক মনোয়ার এর জীবনী-Biography of Allama Tareq Monwar
সাদিকা পারভিন পপি এর জীবনী-Biography of Sadika Parveen Poppy
মোশাররফ করিম এর বয়স, শিক্ষা ও জীবনী-Biography Of Mosharraf Karim
টিউলিপ সিদ্দিকী এর পরিচিতি ও জীবনী - Introduction and biography of Tulip Siddiqui
আনোয়ার পারভেজ এর জীবনী- Biography of Anwar Parvez
শাহ আবদুল করিম এর জীবনী - Biography of Shah Abdul Karim
জন জংকুক এর পরিচয়, জীবনী,বয়স ও জন্মদিন - John Jungkook's identity, biography, age and birthday
মেয়র আতিকুল ইসলাম এর জীবনী - Biography of Mayor Atiqul Islam