মীর জাফর আলী- Biography Of Mir Jafar ali
মীর জাফর আলী-Mir Jafar ali

মীর জাফর আলী-Mir Jafar ali

মীর জাফর', যাঁর সম্পূর্ণ নাম সৈয়দ মীর জাফর আলী খান

জন্ম: ১৬৯১ সালে

রাজত্ব: ১৭৫৭–১৭৬০ এবং ১৭৬৩–১৭৬৫

মৃত্যু: ৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৬৫ (৭৪ বছর)

পিতা: সৈয়দ আহমদ নাজাফি (মীর মিরাক)

ধর্ম: শিয়া ইসলাম

পরিচিতিঃ 

তিনি ছিলেন ইংরেজ প্রভাবিত বাংলার একজন নবাব।  ভূতপূর্ব নবাব সিরাজউদ্দৌলা নদীয়ার পলাশীর কাছে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হন। মীর জাফর ছিলেন উক্ত যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এবং প্রধান বিশ্বাসঘাতক। তিনি ছিলেন আরব বংশোদ্ভূত এবং সৈয়দ আহমদ নাজাফীর পুত্র। প্রভু আলীবর্দী খানের মতোই তিনি একজন ভাগ্যান্বেষী হিসেবে ভারতে আসেন। আলীবর্দী খান তাঁর বৈপিত্রেয় বোন শাহ খানমকে জাফর আলীর সাথে বিয়ে দিয়ে তাকে বখশী (নওয়াবের পরবর্তী পদমর্যাদা) পদে উন্নীত করেন। ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে কটকের নিকটে শত্রু কবলিত শওকত জংকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে এবং ১৭৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর মারাঠা বাহিনীকে পরাজিত করে জাফর আলী কিছুটা সাহসিকতার প্রমাণ দিলেও ১৭৪৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভোঁসলের নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনীর অগ্রযাত্রার খবর পেয়ে তিনি মেদিনীপুর ছেড়ে বর্ধমানে পালিয়ে আসেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি রাজমহলের ফৌজদার আতাউল্যার যোগসাজসে আলীবর্দীকে ক্ষমতাচ্যূত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। কিন্তু ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেলে তাকে বখশী পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

গিরিয়ার যুদ্ধঃ

১৭৪০ সালে গিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে মীর জাফর আলীবর্দী খানের হয়ে নবাব সরফরাজ খানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যুদ্ধে জয়লাভ করে আলীবর্দী খান। এই যুদ্ধে বেশ খ্যাতি লাভ করে সে। এই যুদ্ধের পরে আলীবর্দী নবাব হলে মীর জাফরকে মসনবদার পদ প্রদান করেন এবং নিজের বোন শাহ খানুমকে তার সাথে বিয়ে দেন। সেই সময় তার বেতন হয় ১০০ টাকা। এর পরে সে নবাবের সেনা প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়।

যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ঃ

১৭৪১ সালের দিকে মারাঠারা বারবার বাংলায় আক্রমন করে এর ধন সম্পদ লুট শুরু করে। এদের দমনের জন্য নবাব আলীবর্দী খানকে বিরামহীন ভাবে যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয়েছিল। সেই সময় মীর জাফর এসব যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করে। এবং সেনানায়ক হিসেবে বিশেষ কৃতিত্ব দেখায়। ১৭৪১ সালের ডিসেম্বরের দিকে মীর জাফর   মারাঠাদের পরাজিত করে উড়িষ্যার বড়বাটি দূর্গ দখল দখল করে সেখানে সপরিবারে বন্দী থাকা নায়েব নাযিম ( উড়িষ্যার নায়েব এবং আলিবর্দীর ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা) এবং সৈয়দ আহমদ খানকে মুক্ত করে।

১৭৪৬ সালে মেদিনীপুরে মারাঠাদের সাথে এক বৃহৎ যুদ্ধে পুরো মারাঠা বাহিনীকে পরাজিত করে। আর এর জন্য নবাব তাকে উড়িষ্যার নায়েব নাযিম প্রদান করেন।  মারাঠাদের বিরুদ্ধে একের পর এক যুদ্ধে জয় লাভ করে মীর জাফর ধিরে ধীরে উচ্চাভিলাষী  ও ক্ষমতালোভী হয়ে পড়ে।

যুদ্ধের শেষ পর্যায়ঃ

মেদিনীপুরে মীর জাফরের সাফল্য লাভের সংবাদে মীর হাবিব ও জানুজী ভোঁসলের নেতৃত্বে একটি সুবৃহৎ মারাঠা বাহিনী উড়িষ্যা থেকে মেদিনীপুরের দিকে অগ্রসর হয়। এতে ভয় পেয়ে মীর জাফর পালিয়ে যান এবং বর্ধমানে আশ্রয় নেন[৭]। তখন আলীবর্দী মীর জাফরকে সহায়তা করার জন্য সৈন্যসহ আতাউল্লাহ খানকে প্রেরণ করেন। কিন্তু মীর জাফর ও আতাউল্লাহ মারাঠাদের বিরুদ্ধে অগ্রসর না হয়ে আলীবর্দীকে হত্যা করার ও তার রাজ্য নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন[৭]। ফলে আলীবর্দী নিজেই সসৈন্যে অগ্রসর হন। মীর জাফর তার পলায়নের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে নবাবের প্রতি উদ্ধত আচরণ করলে নবাব তাকে পদচ্যুত করেন[৭]। অবশ্য পরবর্তীতে তাকে আবার পূর্বপদে বহাল করা হয়। কিন্তু মীর জাফর এসময়ে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ১৭৫০ সালে মীর জাফরের দুর্নীতির নানা তথ্য প্রকাশিত হলে নবাব তাকে ভর্ৎসনা করেন এবং মীর জাফরের ওপর নজর রাখার জন্য মীর জাফরের ভাই মির্জা ইসমাইলের পরিবর্তে খাজা আব্দুল হাদীকে সহকারী প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করেন।

যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে মীর জাফর যেরূপ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন, শেষের দিকে সে কৃতিত্ব ধরে রাখতে পারেন নি। ১৭৫০ সালে নবাব আলীবর্দী গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে মীর জাফর ও রায় দুর্লভকে মারাঠাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু তারা নিশ্চেষ্টভাবে সময়ক্ষেপ করতে থাকেন[৭] এবং অবশেষে বৃদ্ধ নবাবকেই মারাঠাদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হতে হয়।

শান্তি স্থাপনঃ

দীর্ঘ দশ বছর সংঘর্ষের ফলে উভয়পক্ষই ক্রমশ ক্লান্ত ও অধৈর্য হয়ে পড়েছিল। ১৭৫১ সালের মে মাসে মারাঠা নেতা রঘুজী ভোঁসলে ও মীর হাবিব মীর জাফরের মাধ্যমে নবাব আলীবর্দীকে সন্ধির প্রস্তাব দেন। আলীবর্দী সন্ধির প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং এর মধ্য দিয়ে বাংলায় মারাঠা আক্রমণের অবসান ঘটে। মীর জাফর নবাবের প্রধান সেনাপতির পদে বহাল থাকেন।

যে মীর জাফর শুরুর দিকে আলীবর্দী খানের সেনাপতি হয়ে কৃতিত্ব দেখিয়েছিল, যুদ্ধে লড়েছিল সেই মীর জাফর ক্ষমতার লোভে আলীবর্দী খানের নাতি , বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। ক্ষমতার লোভ মানুষকে কতটা অন্ধ করে দেয়, বেঈমান বানিয়ে দেয় তার অন্যতম উদাহরণ এই মীরজাফর।

মৃত্যুঃ

১৭৬৫ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক হয়ে, নিমকহারামের চিরকলঙ্ক মাথায় নিয়ে মৃত্যুবরন করে।  মুর্শিদাবাদে তার বসবাসের বাড়িটিকে এখনো মানুষ নিমকহারাম দেউড়ী নামেই চেনে।

খালেদ মুহিউদ্দীন-Biography Of Khaled Muhiuddin
নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ- Biography Of Barrister Turin Afroz
মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী এর জীবনী
মুফতি কাজী ইব্রাহীম-Biography Of Mufti Kazi Ibrahim
মোস্তফা জামান আব্বাসী
স্যান্ডি সাহা-sandy saha biography
সাফা কবির এর বয়স, শিক্ষা ও জীবনী-biography of Safa Kabir
আল্লামা লুৎফুর রহমান-Biography Of Allama Lutfur Rahman