সাংবাদিক তাসনিম খলিল
journalist Tasneem Khalil
পরিচিতি
তাসনিম খলিল নির্বাসিত বাংলাদেশী সাংবাদিক যিনি সুইডেন ভিত্তিক অনুসন্ধানী ও জনস্বার্থ বিষয়ক ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক। এর আগে ডেইলি স্টারের হয়ে কাজ করেছিলেন এবং সিএনএন-এর একজন স্ট্রিংগার এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরামর্শদাতা ছিলেন।
তাসনিম খলিল ১৯৮১ সালের দিকে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকায় থাকাকালীন খলিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
বাংলাদেশে বন্দী থাকার পরে তিনি এক মাসের জন্য আত্মগোপনে চলে যান এবং তারপরে ২০০৬ সালের জুন বাংলাদেশের একটি প্রধান বিমানবন্দর দিয়ে পালাতে সক্ষম হন। সেখান থেকে তিনি তার পরিবারের সাথে নির্বাসিত হয়ে সুইডেনে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন, এমন একটি দেশ যা তিনি বাক স্বাধীনতার রেকর্ডের জন্য বেছে নিয়েছিলেন। সুইডেন তাকে ২০০৭ সালের জুন পর্যন্ত নির্বাসনে থাকার সুযোগ দেয়। তিনি এ মানবাধিকার চর্চিত মালমো ইউনিভার্সিটি মধ্যে মালমো এবং যখন সুইডেনে তার নিজের পত্রিকা শুরু করেন। খলিল শারমিন আফসানা সুচির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির একটি ছেলে রয়েছে। যার নাম তিয়াস।
কর্মজীবন
২০০০-২০০৭ সাল পর্যন্ত তাসনিম খলিল দ্য ডেইলি স্টারের সহকারী-সম্পাদক সম্পাদক ছিলেন। এই সময়ে তিনি ফোরামের পক্ষেও লিখেছিলেন, এটি একটি মাসিক পত্রিকা। পরে তিনি সিএনএন-এর জন্য বাংলাদেশ থেকে একজন স্ট্রিংগার এবং ২০০৬ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর পরামর্শক হয়েছিলেন। খলিল তার প্রতিবেদনে সক্রিয় ছিলেন এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত সমস্যা এবং লঙ্ঘন সম্পর্কে তার ব্লগিংয়ে "সুপরিচিত" ছিলেন। তার স্ত্রী তাকে তাকে সর্বদা বলতেন, লেখালেখির কারণে খলিলকে সমস্যায় ফেলতে পারে।
বাংলাদেশে বন্দী হয়ে সুইডেনে পালিয়ে যাওয়ার পরে, খলিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওয়ার্ল্ড রিপোর্টের প্রকাশক এবং সম্পাদক, যেখানে তিনি সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক এই ম্যাগাজিনে মানবাধিকার বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করেছেন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওয়ার্ল্ড রিপোর্টে, খলিল বাইরের বিশ্বের সাথে যোগাযোগের একটি উপায় পেয়েছেন।
বিতর্কিত
বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বঘোষিত নাস্তিক তাসনিম খলিল। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করাই যেন তার নেশা। তাই সুইডেনে বসে নিজের ‘বদ অভ্যাস’ হিসেবেই গুজব আর সাংবাদিকতাকে একত্রে গুলিয়ে ফেলেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগেই ২০০৭ সালে তাসনিম খলিল অপকর্মের জন্য দেশ থেকে ‘পাততাড়ি’ গুটিয়েছেন। বিলাসী জীবনের হাতছানিতে বিভোর হয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে আয়েশে বসবাস করছেন সুইডেনে। এক যুগ ধরে সেখানে বসেই বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার যোগসাজশে বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন তিনি।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অস্থিতিশীল ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির ‘খোয়াব’ তার চিরায়ত। এ কারণে এরই মধ্যে ‘গুজব গুরু’ হিসেবে আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন। বিদেশে বসে অনলাইনে দেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে কূটকৌশলই তার নেশা।
তাসনিম খলিল মনেপ্রাণে জামায়াত মতাদর্শে বিশ্বাসী একজন নামসর্বস্ব সাংবাদিক। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুর্নীতিবাজ সাবেক কর্মকর্তা শামসুল আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন বিএনপি-জামায়াতের ‘গুজব সেলে’র পেইড কর্মী হয়ে কাজ করছেন তিনি। তার মূল কাজ হলো, প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ও সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরিতে উসকানি দেয়া।
সেই সময় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কয়েকটি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যাদের ব্যক্তিগত ইমেইলে ও মোবাইলে টেক্সট দিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিতেন তিনি। পরবর্তীতে ভিনদেশিরা বিপুল পরিমাণে অর্থ সহায়তার প্রলোভন দিলে তাসনিম দেশের নানা গোপন নথি দেশবিরোধী শক্তিকে সরবরাহ করে দেন।
এজেন্ডাভিত্তিক সাংবাদিকতায় নিয়োজিত তাসনিম আসলে জন্মভূমির প্রতি অকৃতজ্ঞ। সেখানেও দেশের বিরুদ্ধে নানা প্রকারের ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছেন। সাংবাদিক নাম নিলেও তিনি মূলত প্রতারক। আবার এগুলোই নিজেদের ভূইফোঁড় অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘নেত্র নিউজ’র প্রধান খোরাকও বটে! এসব গুজবের দৌড়ে ‘করিৎকর্মা’ হিসেবেই ক্রমশ নিজেদের মেলে ধরে যুক্তরাজ্যে পলাতক ও দণ্ডিত বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বোচ্চ আস্থাও কুড়িয়েছেন।
তাসনিম খলিলের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথে। সিলেট নগরের পৌরবিপনী মার্কেটে কিংশুক মুদ্রায়ণ নামে তাদের একটি পারিবারিক প্রেসের ব্যবসা ছিল। জামায়াত অনুসারি কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত তাসনিমের বাবা কাসেমি মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর ছিলেন।
সিলেট নগরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পরিবার হিসেবে তারা চিহ্নিত। তাছাড়া মাওলানা সাঈদীসহ কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতারা সিলেট সফরে গেলে তাসনিমদের বাড়িতে নিয়মিত যেতেন। তাসনিম বর্তমানে সুইডেনের আরেব্রোতে বসবাস করছেন। জানা গেছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন নানা ভুল তথ্য দিয়ে তিনি সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
গ্রেপ্তার
২০০৭ সালের ১১ ই মে মধ্য রাতের ঠিক পরে তাসনিম খলিলকে ঢাকার ধানমন্ডি থানায় সাদা পোশাকধারী চারজন বাংলাদেশি সেনা সুরক্ষা কর্মকর্তা তাকে আটক করে। তার স্ত্রী বলেছিলেন যে অফিসাররা তাদের বাড়িতে এসে তার স্বামীকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই নিয়ে যায় তবে জরুরি অবস্থার কারণে। সুরক্ষা বাহিনী তার বাড়িতে থাকাকালীন তারা পুরো অনুসন্ধান চালিয়ে তার পাসপোর্ট, কম্পিউটার এবং টেলিফোন সরঞ্জাম এবং তার সাংবাদিকতার কাজে ব্যবহৃত কাগজপত্র এবং ইলেকট্রনিক ফাইল বাজেয়াপ্ত করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিশ্বাস করেছে যে তিনি তার মানবাধিকার রিপোর্টিং এবং বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আটক ছিলেন এবং ডেইলি স্টারের এক সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেছেন যে তাসনিম খলিল ডট কম ব্লগ করার কারণে সরকার তাকে আটকানোর কথা বলেছিল।