নোমান আলী খান এর জীবনী-Biography of Noman Ali Khan
ডাক নাম: হাসনা খান
জন্ম: ১৯৭৮
ধর্ম: ইসলাম
জন্মস্থান: পাকিস্তান
জাতীয়তা: আমেরিকান
পেশা: ইসলামী বক্তা
ইউটিউব: https://www.youtube.com/user/BayyinahInstitute
ফেসবুক: https://www.facebook.com/bayyinahinst
ইনস্টাগ্রাম: www.instagram.com/bayyinahinst
টুইটার: http://twitter.com/bayyinahinst
ওয়েবসাইট: https://bayyinah.com/
প্রাথমিক জীবন
খান জার্মানিতে এক পাকিস্তানি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং প্রাক্তন পূর্ব বার্লিনে তাঁর প্রাক বিদ্যালয়ের বছর কাটিয়েছেন। তারপরে, তার বাবা সৌদি আরবের রিয়াদে পাকিস্তান দূতাবাসে কাজ করেছিলেন। যেখানে খান ২য় থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পাকিস্তান দূতাবাসের স্কুলে পড়েছিলেন,তার কৈশোর বয়সে তার বাবা নিউইয়র্কে পরিবার নিয়ে চলে আসেন । ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছয় বছর তাঁর পরিবার রিয়াদে অবস্থান করেন। এরপর তাঁরা চলে যান আমেরিকায়। সেখানে তিনি খ্রিষ্টানদের পরিচালিত একটি হাইস্কুলে ভর্তি হন।
কর্মজীবন
নোমান আলী খান হলেন একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত আমেরিকান মুসলিম বক্তা। তিনি "দ্য বাইয়্যিনাহ ইন্সটিটিউট ফর এ্যারাবিক এ্যান্ড কুর'আনিক স্টাডিজ"-এর প্রতিষ্ঠাতা, সি.ই.ও. এবং প্রধান উপদেষ্টা| ইসলামী ব্যক্তিত্বগণের জীবনীভিত্তিক অভিধান "দ্য ফাইভ হান্ড্রেড মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল মুসলিমস" এটির পঞ্চম সংষ্করণে নোমান আলী খানকে কোন র্যাংঙ্কিং ছাড়াই বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিমদের মধ্যে একজন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
নাসাঊ ইউনিভার্সিটি কলেজে আরবির অধ্যাপক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের পর, নোমান আলী খান ২০০৬ সালে বায়্যিনাহ ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।
বই প্রকাশ
নোমান আলী খান ইংরেজিতে দুইটি বই প্রকাশ করেছেন।
একটি হল,Divine Speech: Exploring Quran As Literature এটি তিনি বাইয়্যিনাহের মাধ্যমে নিজেই ২০১৬ সালে প্রকাশ করেন।
অন্য বইটির নাম, Revive Your Heart: Putting Life in Perspective কিউব প্রকাশনী বইটি ২০১৭ সালে প্রকাশ করে। এছাড়াও তিনি বাইয়্যিনাহের কোর্সের জন্য দুইটি আরবি বইয়ের সহকারী রচয়িতা এবং প্রকাশক।
জনপ্রিয়তা
কোরআনের চমৎকার শৈল্পিক সৌন্দর্য উপস্থাপনার জন্যে তিনি বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের মুসলিম তরুণ প্রজন্মের কাছে এক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। সারা বিশ্বের মুসলিম তরুণরা আজ তাঁকে নিজেদের মডেল হিসাবে কল্পনা করেন, তাঁর মতো হতে চান। কোরআনের শব্দচয়ন কতটা সৃজনশীল, ভাষা কতটা মনোমুগ্ধকর, অর্থ কতটা যৌক্তিক – এগুলোই নোমান আলী খানের চিন্তাভাবনা ও আলোচনার বিষয়। তাঁর বক্তব্যে কোরআনের অন্তর্গত সৌন্দর্য ও মুজিযা মানুষের চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ওঠে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও অনলাইনে তাঁর বক্তব্য শুনে অসংখ্য মানুষ ইসলামের দিকে ফিরে আসছে এবং ইসলাম গ্রহণ করছে। তিনি প্রায় ২০টিরও অধিক তাফসীর গ্রন্থ পাঠ করেছেন। ফলে কোরআন নাযিলের ইতিহাস, শব্দচয়নের কারণ, ভাষার অলঙ্কার, অর্থের গভীরতা, যুক্তির প্রখরতা এবং ব্যাকরণগত শুদ্ধতার বিষয়গুলো তাঁর আলোচনায় ফুটে উঠে। তাই অনেক ইসলামী স্কলার নোমান আলী খানকে আল কোরআনের ভাষাবিজ্ঞানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এছাড়াও বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী ইসলামী স্কলারের মাঝে তাঁর স্থান অন্যতম।
বায়্যিনাহ ইন্সটিটিউটের উন্নয়ন
উস্তাদ নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা-শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব।
বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষাভাষী অসংখ্য ইসলাম অনুরাগী তরুণ-তরুণী তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছেন নিয়মিত। উস্তাদ নুমান আলী খান যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত বাইয়্যিনাহ ইনস্টিটিউট নামক একটি আরবি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও।
উস্তাদ নুমানের শিক্ষাজীবন শুরু হয় সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে। যেখানে তিনি তাঁর প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। প্রাথমিক জীবনে তিনি এতটা ধার্মিক ছিলেন না। এমনকি কলেজে তিনি ফিলোসফি ক্লাস নেওয়ার পর তিনি ২ বছর নাস্তিক ছিলেন। এর পর এক ভাই এর গভীর সাধনার পর তিনি ইসলামের পথে আসেন। এর পর তিনি আরবী ভাষার উপর আকৃষ্ট হন। তিনি আরবি ব্যাকরণ শিখেন পাকিস্তানে। সেখানে তিনি ১৯৯৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে স্থান অর্জন করেন।
কিন্তু আরবিতে তাঁর গভীর পড়াশোনা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ডক্টর আব্দুস সামি এর তত্বাবধানে। ডক্টর আব্দুস সামি পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের কুর’আন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ যিনি সময়ে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেতেন আরবি শিক্ষা এবং কুর’আন এর তাফসীরের উপরে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখতে। তাঁর অধীনে পড়াশোনায় নুমান আলী খান আরবি ভাষা ও ব্যাকরণের উপরে তীক্ষ্ণ এবং গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি পরবর্তীতে ডক্টর আব্দুস সামির কাছে আরো উপকৃত হন তাঁর সম্পূর্ণ শিক্ষাদান পদ্ধতিকে আত্মস্থ করে। তিনি ডক্টর সামির করা কাজগুলোকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন তাঁর নিজের ছাত্রদের উপকারের জন্য। তার আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষন হল ডাঃ ফাদেল আল সামারাই। উস্তাদ নুমান ১৯৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক এবং ক্লাসিক্যাল আরবি শিক্ষাদান শুরু করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৭ বছর ধরে নুমান আলী খান নাসাউ কমিউনিটি কলেজে মডার্ন শিক্ষকতা করেন। সেখানে তিনি “মডার্ন স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড ক্লাসিক্যাল অ্যারাবিক” শেখান দেশজুড়ে। তিনি মূলত তার দাওয়াহ প্রচার করে থাকেন ভিডিও বক্তৃতার মাধ্যমে। বর্তমানে তিনি বায়্যিনাহ ইন্সটিটিউটের সিইও হিসেবে ফুল টাইম সময় দেন। তার অধীনে ৪৩ জনের অধিক কর্মকর্তা রয়েছেন। তার প্রজেক্ট বায়্যিনাহ.টিভি তে তার ২০০ ঘন্টার উপর লেকচার রয়েছে আরবি শিক্ষা, কুর’আন কভার টু কভার, হিজাব সিরিজ, সেইম সিরিজ সহ অনেক। তার পরবর্তী প্রজেক্ট হল বায়্যিনাহ.স্টুডিও তৈরি করা যেখানে টক-শো, নাটক ইত্যাদি প্রস্তুত হবে।