ডঃ মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী-Biography of Dr. Mufti Maulana Muhammad Kafiluddin Sarkar Salehi
বাবার নাম: পিতা মরহুম মুহাম্মদ আসেমুদ্দীন সরকার
মায়ের নাম: আলহাজ্জাহ মুসাম্মাত কামলা খাতুন
জন্ম: ১৯৬১ সালে ১ মার্চ
সন্তান: তিন পুত্র এবং তিন কন্যা
ফেসবুক: https://www.facebook.com/kafiluddinsarkarsalehi/
ইনস্টাগ্রাম: https://www.instagram.com/kafiluddinsarkarsalehi/
টুইটার: https://twitter.com/DrKafiluddin
ওয়েবসাইট: https://kafiluddinsarkar.com/
ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক, বাগী অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী এর দেশে ও দেশের বাইরে ব্যাপক সুনাম ও পরিচিতি রয়েছে। দীর্ঘকাল যাবত তিনি শিক্ষা, গবেষণা, ফাতাওয়া প্রদান, ওয়াজ-নসীহত, বই-পুস্তক লেখালেখি, গ্রন্থ প্রণয়নসহ সুমহান ইসলামের নিরন্তর খেদমত করে চলেছেন।
বাল্যজীবন
ড. মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী ১৯৬১ সালে ১ মার্চ নীলফামারী জেলার ডােমার থানাধীন চিলাহাটী নিজভােগডাবুরী সরকার পাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মুহাম্মদ আসেমুদ্দীন সরকার একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন। তার মাতা আলহাজ্জাহ মুসাম্মাত কামলা খাতুন।
শিক্ষাজীবন
ইলমেদ্বীন শিক্ষাগ্রহণের মহান নিয়তে শৈশবকালে মাওলানা সালেহীকে তাঁর পিতা-মাতা স্থানীয় “চিলাহাটী জামেউল উলুম ফাযিল মাদরাসা”-এ ভর্তি করেন। তিনি এখান থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কৃতিত্বের সাথে সমাপ্ত করেন।
মালানা সালেহী শিক্ষা জীবনের শুরুতেই প্রখর মেধার পরিচয় দেন। তিনি শিক্ষা জীবনে কোন আরবি পুস্তকের কয়েকপৃষ্ঠা একবার পাঠ করলে দ্বিতীয়বার দেখার প্রয়োজন হতো না। ১৯৭৫ সালে তাঁর শ্রদ্ধেয় পিতা ইন্তেকাল করলে তিনি তাঁর মায়ের তত্বাবধানে উচ্চশিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ভারতের উত্তর প্রদেশে গমন করেন এবং সর্বোচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করে দেশে ফিরে আসেন।
১৯৮২ সালে মাওলানা সালেহী বাংলার জামে আল-আযহার নামে খ্যাত “ছারছীনা জামেয়া ই ইসলামিয়া” পিরোজপুর-এ ভর্তি হয়ে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড-এর অধীনে ক্রমান্বয়ে কৃতিত্বের সাথে ১৯৮২ সালে ফাযিল শ্রেণিতে প্রথম বিভাগে, ১৯৮৪ সালে কামিল হাদীস বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম, ১৯৮৫ কামিল ফিকহ বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম, ১৯৮৭ সালে কামিল তাফসীর বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং ১৯৮৯ সালে কামিল আদব বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে সম্মানের সাথে উত্তীর্ণ হন। এরই মধ্যে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
মাওলানা সালেহী কর্মজীবনে অধিক ব্যস্ত থাকার পরেও পড়া-লেখার ব্যাপারে একজন ব্যতিক্রমধর্মী ব্যক্তি। এখনো তাঁর সাথে দেখা হলে কোন না কোন বই তাঁকে পড়তে দেখা যায়। তিনি তাঁর এই ব্যস্ততম জীবনে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমত সম্মানের সাথে এম.ফিল. এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে পি-এইচ.ডি. ডিগ্রী অর্জন করেন।
মাওলানা সালেহীর দেশবিদেশের অসংখ্য বুযুর্গ উস্তাযগণের মধ্যে অন্যতম ক’জন হলেন শায়খুল হাদীস আল্লামা নিয়ায মাখদুম খোত্তানী আত তুর্কিস্তানী (র), অধ্যক্ষ মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ আব্দুল কাদীর (র.) (ওআইসি এর ফিকহ একাডেমির সদস্য), আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুর রব খান (র.), মাওলানা মুফতী আ ম ম আহমাদুল্লাহ (র.), মুহাদ্দিস মাওলানা রিদওয়ানুল কারীম (র.) (সাতক্ষীরার হুজুর), মাওলানা আব্দুল কাদির (র.) (খুলনাভী হুজুর), আলহাজ্ব মাওলানা সূফী আব্দুর রশীদ (র.), মাওলানা রুহুল আমীন ফরায়েজী (র.), অধ্যক্ষ মুফতী আমজাদ হুসাইন (র.), ড. মুহাম্মদ সেকান্দার আলী, মাওলানা মুহীয়ুদ্দীন হামীদী (র.), মাওলানা এনায়েতুল্লাহ (র.), এবং মৌলভী ইব্রাহীম হুজুর।
মাওলানা সালেহীন ইলমে শরীয়তের পাশাপাশি ইলমে তাসাওউফও অর্জন করেন। তিনি ছারছীনা দরবারের পীরে মরহুম মুজাদ্দিদে জামান, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরীকত, শাহ সূফী হযরত মাওলানা আবু জা’ফর মোহাম্মদ সালেহ (নাওয়ারাল্লাহু মারকাদাহ)- এর হাতে বয়াত গ্রহণ করেন।
পারিবারিক জীবন
মাওলানা সালেহী ছারছীনা কামিল মাদরাসার উস্তায এবং দরবারের একনিষ্ঠ খাদেম আলহাজ্ব মাওলানা রফিকুল্লাহ নেছারী সাহেবের একমাত্র জামাতা। তিনি তিন পুত্র এবং তিন কন্যার জনক। তাঁর বড়ভাই একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক।
কর্ম জীবন
মাওলানা সালেহী ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম কামিল মাদরাসা ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত কামিল মাদরাসায় আরবি লেকচারার পদে যোগদান করেন। তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে মুজাদ্দিদে যামান ছারছীনা দরবারের পীর হযরত মাওলানা শাহ আবু জা’ফর (র.) কামিল হাদীসের ক্লাস চলাকালীন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। অতঃপর মাওলানা সালেহী এই জগৎখ্যাত ওলী আল্লামা আবু জা’ফর ছালেহ (র.)-এর আদেশ মতে শ্রদ্ধেয় মায়ের অনুমতি নিয়ে ছারছীনা মাদরাসার তা’লীমের কাজ শুরু করেন।
ছারছীনা আলিয়া মাদরাসায় কামিল তাফসির বিভাগ খোলা হলে মাওলানা সালেহী এই বিভাগের প্রাধান পদে যোগদান করেন এবং কৃতিত্বের সাথে উলূমে কুরআনের খিদমত করে সারা দেশে খ্যাতি অর্জন করেন। ছারছীনার পীর হযরত মাওলানা শাহ আবু জাফর ছালেহ (র.)-এর ইন্তেকালের পরে তিনি ঢাকাস্থ মুহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়বিয়ার প্রথমত প্রধান মুহাদ্দিস, অতঃপর ভাইস প্রিন্সিপাল এবং কিছুদিনের জন্য অ্যাকটিং প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা জেলাধীন ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। ছারছীনা শরীফের বর্তমান পীর মুজাদ্দিদে যামান আমীরে হিযবুল্লাহ হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহর (মা.জি.আ.)-এর নির্দেশক্রমে ঢাকা শহরের শ্যামপুর থানাধীন ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ পদে যোগদান করে বর্তমানে কর্মরত আছেন।
মাওলানা সালেহী ঢাকার শান্তিনগরস্থ ঐতিহ্যবাহী আমিনবাগ জামে মসজিদের বর্তমান খতীব। তিনি সেন্ট্রাল শরীয়াহ কাউন্সিল-এর একজন সক্রিয় সদস্য এবং তিনি বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামী ইন্সুরেন্স কোম্পানির শরীয়াহ এ্যাডভাইজরী বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্য। তিনি হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর (২০১৫-১৬) এবং এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট (আটাব)-এর নির্বাচিত ইসি সদস্য। তিনি রিয়াদুল জান্নাহ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (হজ্জ ও ওমরাহ এজেন্সীর)- এর স্বত্বাধিকারী।
মাওলানা সালেহী -এর মতে তাঁর জীবনের সফলতার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলেন ছারছীনা শরীফের শ্রেষ্ঠতম ওলী শাহ আবু জা’ফর (র.)- এর সান্নিধ্য লাভ করা এবং অধিকতর যোগ্য শিক্ষকগণের সাহচার্য পাওয়া। বিশেষ করে জগৎবিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা নিয়ায মাখদুম খোতানী (র.)-এর মত একজন উস্তাযের দরসে বসা তাঁর জীবনের পরম সৌভাগ্যের দুয়ার খুলে দেয়। এখানে নিঃসঙ্কোচে বলা প্রয়োজন যে, এই ছারছীনা দরবারের উস্তায, নিবেদিত প্রাণ শ্বশুর হযরত মাওলানা মুহাম্মদ রফিকুল্লাহ ছাহেবের প্রত্যক্ষ নেগরানীতে তা’লীম তলক্বীনে তিনি তাঁর জীবনকে বিকশিত করার সুযোগ লাভ করেন।
কৃতিত্ব
মাওলানা সালেহী শিক্ষকতার জীবনে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর শাগরিদদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র বর্তমানে সারাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সহ দেশের বিভিন্ন দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, মুহাদ্দিস, মুফাস্সির, ফকিহ ও আদীব পদে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর অনেক ছাত্র যারা নিজ হাতে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে দ্বীন ইসলামের খিদমত করে চলেছেন।
ইসলামের জটিল এবং কঠিন বিষয়গুলােকে গবেষণামূলক সমাধান দেয়ার জন্য তিনি রিয়াদুল জান্নাহ রিচার্স সেন্টার” নামক একটি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি “রিয়াদুল জান্নাহ" নামক একটি পাক্ষিক পত্রিকাও বের করেন। ক্ষুরধার লিখুনির মাধ্যমে ইসলামের প্রচার এবং প্রসারের জন্য "মিদাদ ফাউন্ডেশন" নামে একটি কলম সৈনিকদের মিলনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। দ্বীনী শিক্ষা মানুষের দোরগােড়ায় পৌছে দিতে মাওলানা তাঁর জন্মস্থানে আল-মদীনা কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করেন। এই কমপ্লেক্সের অধীনে রয়েছে জামি'আ-ই-দ্বীনিয়াহ, আল-মদীনা জামে মসজিদসহ জনহিতকর কার্যক্রম অর্ন্তভূক্ত রয়েছে।
ড. মুফতী মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী এর বইসমূহ
১.ইমাম আজম আবু হানীফা (র.)
২.জান্নাতুল বাকী ও কবর যিয়ারত
৩.নারীর অলংকার
৪.নারীর হজ্ব
৫.পবিত্র হজ্ব ওমরাহ ও যিয়ারত
৬.বিশ্বনবী (স.)
৭.মীলাদ ও কিয়াম
৮.যমযম কূপের ইতিকথা
৯.যিন্দা নবী(ﷺ)
১০.শবে বারা’আত
১১.সহীহ্ অযূ ও সহীহ্ নামায
১২.সিয়াম সাধনা
১৩.হক বাতিলের লড়াই
১৪.হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহিম
১৫.১১৩ মাসআলায় বিভ্রান্তির সমাধান (২টি খন্ড)
সাম্প্রতিক মন্তব্য
#MD.Suruj ali
Muhtarm Ami aponake nice onek gorvha kori. Madrasar akjon mutually aponake naki chinena . R. Pir k naki pir kebla bola jabena . R rouja mukhi hoy dua kora jabena aponar mtay ki.