ইকবাল আহমেদ
১৯৫৬ সালের আগস্ট মাসে সিলেটের এক শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। ১৯৭১ সালে, ১৫ বছর বয়সে, তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান। তিনি ওয়েস্টমিনস্টারের সিটি কলেজে পড়ালেখা করেন। কয়েক বছর পর ওল্ডহ্যামে অবস্থিত তাদের পরিবারের ব্যবসায়ে যোগদান করেন । ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে তার ভাই কামাল ও বিলাল ব্যবসায় যোগদান করেন।
তিনি মুলত চিংড়ি ব্যবসায় সাফল্যের পর তার দুটি কোম্পানি, সিমার্ক এবং ইবকোর শিপিং, হোটেল এবং রিয়েল এস্টেটও সাফল্য অর্জন করে। তার উভয় কোম্পানী যুক্তরাজ্যে তাকে ধনীদের একজনে পরিণত করে। তিনি সানডে টাইমস রিচ তালিকাতে অবস্থান করা শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ বাংলাদেশী।
১৯৯২ মার্চ মাস থেকে ইকবাল আহমেদ সেমার্ক গ্রুপের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ।যে প্রতিষ্ঠান তিনি তার ভাইদের সাথে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের কোম্পানী Ibco খাদ্য সরবরাহে ব্যবসা করে এবং Seamark হিমায়িত খাদ্য প্রসেস করে থাকে। তিনি ম্যানচেস্টার সিটির সিটি অফ ম্যানচেস্টার স্টেডিয়ামের নিকটবর্তী দ্যা বারমোলো এবং সিনাবাবার যা ১৪ নভেম্বর ২০০৭ যাত্রা শুরু করে যার যার মূল্য ৫ মিলিয়ন পাউন্ড
আস্তে আস্তে ব্যবসা অনেক দূর এগিয়ে যায় সি মার্ক-এর। ব্রিটিশ ইনভেস্টর হিসেবে ডিটিআই-এর উৎসাহে ১০ মিলিয়ন ইউএসডি ডলার ব্যয় করে বাংলাদেশে অতি আধুনিক ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করেন ইকবাল আহমেদ। ২০০০ সালের নভেম্বরে ফ্যাক্টরির প্রাতিষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আর সবার সঙ্গে আমন্ত্রিত হন রয়েল প্রিন্সেসও। অনেক সম্মানিত অতিথি সেদিন উপস্থিত ছিলেন। পরিপূর্ণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চট্টগামের ফ্যাক্টরি আশপাশের এলাকায় খুব দ্রুত প্রসারিত হয়। সঠিক মূল্যে খাদ্যদ্রব্য হিসেবে সোমোসা'স, পারাথা এবং সবজি সরবরাহ করে আসছে। এদিকে আরও দুটি সমুদ্র খাদ্য প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করে একই গ্রুপ।
ব্যক্তিগত জীবন
সিলেট থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমানোর পর তার বাকি জীবনটা ব্রিটেনময়। তবে শেকড়ের টান ভুলেননি বলেই ব্যবসায়িক সূত্রটা গাঁথা এই বাংলাদেশের সঙ্গেই। ইকবাল আহমেদ তিন সন্তানের জনক। বড় ছেলে মঞ্জুর আহমেদ যোগ দিয়েছেন বাবার রেস্টুরেন্ট ভারমিলিয়নে। পেশাগত জীবনের বাইরে খুব একটা কথা বলতে পছন্দ করেন না ইকবাল আহমেদ। সবসময় ব্যক্তিগত জীবনটাকে রাখতে চেয়েছেন হিসাবের বাইরে। তার প্রিয় খেলা গলফ, টেনিস। অবসরে প্রায়ই গলফ খেলেন। এ ছাড়া পরিবারের সঙ্গে ভ্রমণ করতে আর সময় কাটাতে ভালোবাসেন। এর বাইরে সময়-সুযোগ পেলে সাঁতার কাটেন।
সমৃদ্ধি অর্জন
খাদ্যদ্রব্য প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকিং করে ইউরোপের অধিকাংশ দেশে রপ্তানি হতো। ফলে ১৯৯৮ সালে রপ্তানিতে লোভনীয় পুরস্কার কুইন্স অ্যাওয়ার্ড লাভ করে সি মার্ক। ১৯৯৯ সালে ইউরোপের ব্যবসা জগতের সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস পুরস্কার লাভ করে সি মার্ক। এ ছাড়া সি মার্ক বাংলাদেশে জাতীয় পুরস্কার এবং গোল্ড মেডেল পায়। শুধু তাই নয়, পরপর ২০০১, ২০০২, ২০০৩ সালে সমুদ্র খাবার রপ্তানিতে শীর্ষস্থানে অবস্থান করে।
শীর্ষ ধনীর তালিকায়
ব্রিটেনভিত্তিক প্রভাবশালী সানডে টাইমস পত্রিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইকবাল আহমেদ ব্রিটেনের এক হাজার ধনীর তালিকায় ৪৬৬তম স্থান পেয়েছেন।এরপর ২০০৯ সালে এশিয়ার ২০ ধনীর তালিকায় উঠে আসেন সফল ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদ।