আমীরুল ইসলাম এর জীবনী-Biography Of Amirul Islam
জন্ম ৭ই এপ্রিল ১৯৬৪, লালবাগ, ঢাকা । পিতা প্ৰয়াত সাইফুর রহমান। মাতা প্ৰয়াত আনজিরা খাতুন। পিতৃব্য প্রয়াত কবি হাবীবুর রহমান, খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক । শিশুসাহিত্যের সকল শাখায় সমান স্বচ্ছন্দ। ২০০৬ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। সবচেয়ে কম বয়সে খামখেয়ালি ছড়াগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন শিশু একাডেমী আয়োজিত অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার। পরে এই পুরস্কার পেয়েছেন আরও পাঁচবার । এ ছাড়াও পেয়েছেন সিকানন্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০০৩), পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৫), ছােটদের পত্রিকা পুরস্কার (২০০৭), ছোটদের মেলা পুরস্কার (২০০৯/২০১০), জাতীয় ছড়া উৎসব। ২০১১ সম্মাননা, শামসুর রাহমান সাহিত্য পুরস্কার (২০১১) এবং ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল পুনর্মিলনী সম্মাননা। ২০১১ । কলকাতা থেকে অন্নদাশঙ্কর সাহিত্য পুরস্কার ২০১২। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। সবই শিশুসাহিত্য। দেশের খ্যাতিমান সকল প্রকাশনা সংস্থা থেকে এক বা একাধিক বই প্ৰকাশিত হয়েছে । দশ বছর সম্পাদক ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত কিশোর-তরুণদের উৎকর্ষধ্যমী মাসিক আসন্না-র । অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার
ব্যক্তিগত জীবন
আমীরুল ইসলামের জন্ম ৭ এপ্রিল ১৯৬৪, লালবাগ ঢাকায়। তার পিতা প্রয়াত সংবাদকর্মি সাইফুর রহমান [২] এবং মা আনজিরা খাতুন। তার বড় চাচা হাবীবুর রহমান ছিলেন খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক। ছেলেবেলায় পরিবারের সবাই তাকে ডাকত টুলু নামে। পরিবার ও বন্ধুমহলে তিনি এখনও ওই নামেই পরিচিত। কৌতুকপ্রিয়, আড্ডাবাজ, জীবন-রসিক ও ভোজনপ্রিয় আমীরুল ইসলাম ঘুরেছেন পৃথিবীর প্রায় বিখ্যাত সব শহর। প্রিয় শখ বই পড়া, পুরনো বই ও চিত্রকলা সংগ্রহ, দাবা খেলা, রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত।
শিক্ষাজীবন
আমীরুল ইসলাম প্রাক প্রাথমিক পাঠ সম্পন্ন করেন নিজ বাড়িতে, বাবার কাছে। ১৯৭২ সালে পুরান ঢাকায় অবস্থিত ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকেই নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কর্মজীবন
অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার কিশোরদের পাতার বিভাগীয় সম্পাদক হিসাবে কর্মরত ছিলেন পাঁচ বছর। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত কিশোর পত্রিকা আসন্ন সম্পাদনা করেছেন দশ বছর। এরপর প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে যুক্ত আছেন চ্যানেল আইয়ের সাথে। বর্তমানে তিনি চ্যানেল আইয়ের জেনারেল ম্যানেজার (অনুষ্ঠান) হিসাবে কর্মরত।
সাহিত্য
আমীরুল ইসলাম বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সফল শিশু সাহিত্যিক। তাকে বলা হয় আধুনিক শিশু সাহিত্যের রূপকার। দীর্ঘ তিরিশ বছর ধরে লিখছে ছোটদের জন্য। রূপকথা তার প্রিয় বিষয়। তাই রূপকথা নিয়ে লিখেছেন নতুন নতুন বই। প্রতিটি লেখায় রয়েছে নতুনত্বের স্বাদ। পুরনো রূপকথা নতুন ঢংয়ে লেখার ক্ষেত্রে তার বিকল্প বাংলা সাহিত্যে আর একজনও নেই। তিনি সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছেন ছড়া লেখে। বিষয়বৈচিত্র্য ও সংখ্যা বিচারে বাংলা ছড়াসাহিত্যেও তার সমকক্ষ কেউ নাই।
ছড়া ছাড়াও তিনি ছিখেছেন গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ। তার প্রথম বই খামখেয়ািলী। বইটি যখন প্রকাশিত হয় তখন তার বয়স বিশ বছর। ওই বয়সেই তিনি বইটির জন্য অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন। তার আগে এতো অল্প বয়সে এই পুরস্কার আর কেউ পাননি।
পুরস্কার
বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ২০০৬
সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৪
নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ২০০৩
ছোটদের পত্রিকা পুরস্কার, ২০০৭
পদক্ষেপ পুরস্কার, ২০০৫
ছোটদের মেলা পুরস্কার, ২০০৯
ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল পুনর্মিলনী সম্মাননা পুরস্কার, ২০১১
কবি শামসুর রাহমান সাহিত্য পুরস্কার, ২০১১
অন্নদা শঙ্কর সাহিত্য পুরস্কার, কলকাতা ২০১১
কবি হাবীবুর রহমান সাহিত্য পুরস্কার ২০১৪
উল্লেখযোগ্য রচনাবলী
উপন্যাস
অচিন জাদুকর (১৯৮৫)
আমাদের গোয়েন্দাগিরি (১৯৯২)
রুঝুমপুর (১৯৯২)
আশ্চর্য এক অ্যাডভেঞ্চার (১৯৯২)
ফানুসের দেশে অ্যাডভেঞ্চার (১৯৯৪)
পিচ্চি ভূতের বাহাদুরি (১৯৯৫)
একাত্তরের মিছিল (১৯৯৭)
মৌ ভালো থেক (১৯৯৮)
গল্প
আমি সাতটা (১৯৮৫)
এক যে ছিল (১৯৮৭)
দশটা দশ রকম (১৯৮৯)
সার্কাসের বাঘ (১৯৮৯)
ভূত এলা শহরে (১৯৯২)
অমি ওয়ান অমি টু (১৯৯২)
রোবট রহস্য (১৯৯২)
আমি মুক্তিযোদ্ধা হতে চাই (১৯৯৩)
লুথাদ্বীপের রহস্য (১৯৯৪)
শাদা ভূত কালো ভূত (১৯৯৬)
ছড়া
খামখেয়ালি (১৯৮৪)
যাচ্ছেতাই (১৯৮৭),
রাজাকারের ছড়া (১৯৮৯)
আমার ছড়া (১৯৯২)