Syed Muhammad Rezaul Karim
সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম
পরিচয়:
বরিশাল জেলার চরমোনাই ইউনিয়নের আহসানাবাদ গ্রামে বিখ্যাত এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন তিনি। তাঁর পিতা পাক-ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
নাম | সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম |
পিতার নাম | মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি |
জন্ম | ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ |
ঠিকানা | গ্রাম: আহসানাবাদ,ইউনিয়ন: চরমোনাই,জেলা:বরিশাল |
মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীমের শিক্ষাগত যোগ্যতা
সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম-পীর সাহেব চরমোনাই-এর প্রাথমিক শিক্ষা চরমোনাই আলিয়াতেই শুরু হয়। কিন্তু আলিয়ার ছাত্র হলেও প্রায়ই তিনি কওমীয়াতেই ক্লাস করতেন। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসাতেও তিনি কিছুকাল লেখাপড়া করেন।অবশেষে ১৯৯১ সালে চরমোনাই আলিয়া থেকে কামিল হাদীস ও বরিশালসাগরদী আলিয়া থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন।
দক্ষিণবঙ্গের তেমনই একজন প্রবীণ আলেম মাওলানা আ. রহিম যিনি চরমোনাই মাদরাসায় প্রায় বিশ বছর যাবত প্রধান মুহাদ্দিসের দায়িত্ব পালন করে এখন ভোলা আলিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত আছেন। তিনি মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম সম্পর্কে বলেন, “পীর সাহেব চরমোনাই মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমকে হেদায়াতুন নাহু ক্লাশ থেকে কামিল ক্লাশ পর্যন্ত আমি পড়িয়েছি। তাঁর বর্ণীল শিক্ষা জীবন সম্পর্কে আমি জানি। তিনি কামিল হাদিস ও ফিকাহ গ্রুপে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
খেলাফত
তিনি তাঁর পিতা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম (রহঃ) থেকে ১৯৯৪সালে খেলাফত প্রাপ্ত হন।ঐ বৎসর চরমোনাইয়ের বাৎসরিক মাহফিলে এর ঘোষনা হয়। তিনি ২০১৩ সালে থানভী সিলসিলার অন্যতম খলিফা যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মাহমুদুল হাসান থেকে খেলাফত লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে উপমহাদেশের প্রাচীন ও প্রধান দীনি বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দ এর প্রধান মুফতি আল্লামা হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী’র খেলাফতপ্রাপ্ত হন।
কর্মজীবন
ছাত্রজীবন শেষ হতেই তিনি চরমোনাই আলিয়ার শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। পরে দীর্ঘদিন যাবত চরমোনাই আলিয়া ও কওমী মাদরাসার নাযেমে আ’লার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি উভয় শাখার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডে নামের স্বতন্ত্র মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি এবং বাংলাদেশর কওমী মাদরাসাসমূহের প্রধান শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ সভাপতি’র দায়িত্বে আছেন।
মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম দীর্ঘদিন চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। অত্যান্ত কৃতিত্ব ও সফলতার সঙ্গে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ইউনিয়নের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা দিয়ে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
রাজনৈতিক জীবন
ছাত্র জীবন থেকেই সৈয়দ রেজাউল করীম ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং সর্বশেষ তিনি ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রিয় কমিটির ছাত্র কল্যান সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতির ইতি টানেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকায় তিনি এবং তাঁর অন্যান্য ভাইয়েরা কারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ৩ হাজার টাকা চুরির মামলা দিয়ে হাস্যরসের জন্ম দেওয়া হয়েছিল সে সময়।
দেশ রক্ষায় ২০০৯ সালে টিপাইমুখ অভিমুখে লংমার্চ করে তিনি দেশ-বিদেশে ব্যাপক ভাবে আলোচিত হন। ২০০৬ সালে দলের দায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে সামনে থেকেই তিনি ইসলামী সমাজ বিপ্লবের সংগ্রাম অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে পরামর্শের ভিত্তিতে সুচারুরূপে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। তাযকিয়ার ময়দানে যেভাবে তিনি তাঁর রুহানী বয়ানে লাখ লাখ মানুষকে সঠিক পথের পথ দেখাচ্ছেন,তদ্রুপ নীতি ও আদর্শের উপর অবিচল থেকে দেশ ও ইসলাম বিরোধী যেকোনো কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সর্বাগ্রে মাঠে নেমে ঈমানী দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর তাঁর পিতা মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই (রহঃ) ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের পর বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরবর্তী আমীর হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমকে নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির গঠনতন্ত্রে আমীর নির্বাচন পদ্ধতি হচ্ছে, নির্বাচিত আমীরের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে খাস ও আমীরের খলিফাগণের সংখ্যাগরিষ্ঠদের সিদ্ধান্তে নতুন আমীর মনোনীত হবেন; তবে শর্ত থাকে যে, নতুন আমীর হিসেবে যিনি মনোনীত হবেন, তাকে অবশ্যই পূর্ববর্তী মরহুম আমীরের খলিফা হতে হবে। তার উপাধি হবে ‘পীর সাহেব চরমোনাই’। তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির ‘আমীরুল মুজাহিদীন’ এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র আমীর হবেন।