
পুরান ঢাকার বিখ্যাত কাপড়ের মার্কেট - The famous cloth market of Old Dhaka
মোগল আমলে বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁর নামানুসারে এ এলাকার নামকরণ হয়েছিল ইসলামপুর। ফল ব্যবসার জন্য বিখ্যাত এ এলাকায় প্রথম কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা শুরু হয় ১৭৭৩ সালে। সময়ের ব্যবধানে ইসলামপুরের কাপড়ের ব্যবসা সদরঘাটসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে এখানে বিক্রমপুর গার্ডেন সিটি, গুলশান আরা সিটি, সাউথ প্লাজা, জাহাঙ্গীর টাওয়ার, চায়না মার্কেটসহ ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪২টি মার্কেট রয়েছে। সেসব মার্কেটে দোকানের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি।
ইসলামপুর পাইকারি মার্কেটে দেশী-বিদেশী থান কাপড় থেকে শুরু করে থ্রিপিস, শাড়ি, লুঙ্গি, শিশুদের পোশাক, বিছানার চাদর, পর্দার কাপড় ইত্যাদি পাওয়া যায়। তাছাড়া কাপড় তৈরির সব ধরনের সরঞ্জামও পাওয়া যায় এখানে। সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ব্যবসায়ী নেতারা জানান, বছরে ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় ইসলামপুরে, যার অর্ধেকই হয় রোজার মাসে ঈদ কেন্দ্র করে।
কোথায় কী আছে
ইসলামপুর মূল সড়কের প্রথম ও শেষ ভাগের দুপাশের মার্কেটগুলোয় রয়েছে শাড়ি-কাপড়। মাঝামাঝি স্থানের মার্কেটে বেচাবিক্রি হয় চাদর, থ্রি-পিস, স্যুটিং কাপড়, ভয়েল পপলিন ও মার্কিন কাপড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন মূল সড়ক ছাপিয়ে আশপাশের সড়ক ও লেনেও স্থান করে নিয়েছে। জিএল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোডসহ নওয়াববাড়িতে রয়েছে বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট, বিশেষ করে এখন পাইকারি কাপড়ের বাজার বলতেই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকাই হলো এই নওয়াববাড়ী।
নওয়াববাড়ীর প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই দুপাশে চোখে পড়বে বিশাল সব পাইকারি মার্কেট, সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট। চায়না মার্কেট পার করে আরেকটু এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে প্লাজা মার্কেটের। এখানকার নামকরা সব মার্কেট হলো মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা, কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট ও চায়না মার্কেট। আটতলা ভবনের প্রত্যেক তলায়ই পাবেন গজ কাপড়ের বাহারি সব কালেকশন। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেট এটি। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো মানের কাপড় এখানেই তৈরি হয় এবং এখানেই কেনাবেচা হয়।
লোকেশন অনুযায়ী মার্কেট
জি এল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোড সহ নওয়াব বাড়ীতে রয়েছে বিশাল বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট, বিশেষ করে এখন পাইকারী কাপড়ের বাজার বলতেই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকায় হল এই নওয়াব বাড়ী । ঐতিহ্যবাহি নওয়াব বাড়ীর প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই দু-পাশে রয়েছে বিশাল বিশাল সব পাইকারী মার্কেট সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট ।
এবার জেনে নেয়া যাক সেসব মার্কেটে দোকানিরা কি কি পসরা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন। নওয়াব বড়ী গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই প্রথমে পড়বে মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা ,কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট। এসব মার্কেটে মিলবে দেশি বিদেশি শার্ট ,প্যান্ট,পাঞ্জাবি ও মহিলাদের জামার গজ কাপড়।
আরেকটু এগিয়ে গেলে পাবেন জুবায়ের ম্যানসনে এক কালার পলেষ্টার ও আন ষ্টিজ থ্রী পিছ।
জুবায়ের ম্যানসনের পাশেই রয়েছে হোসেন মার্কেট সেখানেও মিলবে বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন প্রকারের গজ কাপড়।হোসেন মার্কেটের ঠিক সম্মুখেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহি আহসান মঞ্জীল সুপার মার্কেট যা চায়না মার্কেট নামেই সর্বাধিক পরিচিত। অষ্টম তলা পর্যন্ত এই মার্কেটে পাবেন সর্ব প্রকারের গজ কাপড়। একই মার্কেটে সব ধরণের গজ কাপড়ের দোকান রয়েছে যা ২য় আর কোন মার্কেটে নেই । বিশাল আয়তনের এই মার্কেটের শেষ সিমা একেবারে আহসান মঞ্জীল জাদু ঘরের সিমানা প্রাচীর পর্যন্ত।
চায়না মার্কেটের প্রতিটি শো-রুমেই দেশিয় কাপড়ের পাশা পাশি উন্নত মানের বিদেশি গজ কাপড়ও বিক্রয় করা হয়। চায়না মার্কেটের দু-পাশে রয়েছে নওয়াব বাড়ী ফুট পাত দোকান মালিক সমিতির খুচড়া গজ কাপড়ের দোকান।যেখান থেকে সাধারণ ক্রেতারা তুলনা মূলক সাশ্রয়ী মূল্যে গজ কাপড় কিনতে পারবেন ।
নওয়াব বাড়ীর সর্বশেষ প্রান্তে রয়েছে প্লাজা মার্কেট।এখানে পাবেন গার্মেন্টস ক্যাটাগরির গজ কাপড় ।
ইসলামপুর এলাকার আরো একটি প্রসিদ্ধ গজ কাপড়ের মার্কেটের নাম হল গুলশান আরা সিটি । এখানে পাওয়া যাবে শিফন জর্জেট ,টিস্যু, ভেলবেট, জিন্স সহ ডেনিমের গজ কাপড় ।
চাদরের গজ কাপড়ের জন্য রয়েছে দৌলত কমপ্লেক্স ।
ভারতীয় নন স্ট্রেস থ্রী পিছের জন্য হায়াৎ দোলন কমপ্লেক্স সহ বেশ কয়েকটি মার্কেট । আদেল কমপ্লেক্স, হাকিম ম্যানসন, আমির মার্কেট সহ বেশ কিছু মার্কেটে রয়েছে দেশিয় শাড়ী কাপড়ের দোকান ।