একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচনী সঙ্গী দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক জোট। একটি ২০-দলীয় জোট (সম্প্রসারিত ২৩ দল); অন্যটি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
দুটি জোটের সঙ্গে গত কয়েক দিন ধরেই বিএনপির আসন বণ্টন নিয়ে দরকষাকষি চলছে। জোটের প্রার্থী ঠিক করার শেষ মুহূর্তে এসে চূড়ান্ত দরকষাকষি চলছে জোটের শরিকদের মধ্যে।বিএনপি ২৪০ আসনে প্রার্থী দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শরিকদের সর্বোচ্চ ৬০ আসন দেবে।
এর মধ্যে ২০-দলীয় জোটের শরিক দলগুলো পাচ্ছে ৪০-৪২ আসন। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো পাচ্ছে ১৮-২০ আসন।২০-দলীয় জোটে বিএনপিসহ দল আছে ২৩টি। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি ছাড়া দল আছে চারটি।
২০ দলকে বিএনপি ৪০-৪২ আসন দেবে এটি মোটামুটি নিশ্চিত। জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে অনেকটা সমঝোতা হয়ে গেছে। তবে শরিকদের দাবি আরও চার-পাঁচটি আসন তাদের ছেড়ে দেয়া হোক।আজ চূড়ান্ত দরকষাকষির সময় জোটভুক্ত দলগুলো চাইবে আর দুই-একটি আসন বাগিয়ে নিতে।জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের যেসব আসন দিচ্ছে বিএনপি
বিএনপির ‘ধানের শীষ’ নিয়েই ভোটে যাচ্ছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সুরাহা করতে রোববার দুপুর ১২টায় রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।একই ইস্যুতে রাতে আরেক দফা বৈঠক হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে। সেখানে চূড়ান্ত আলোচনা হয়।
গণফোরাম
সূত্র জানায়, যেসব আসনে ঐক্যফ্রন্টকে ছাড় দিয়েছে বিএনপি, সেগুলো হল-ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন (ঢাকা-১২), মোস্তফা মহসিন মন্টু (ঢাকা-৭), অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী (ঢাকা-৬), ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর (মৌলভীবাজার-২), গণফোরামে যোগদানকারী আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এমএস কিবরিয়ার ছেলে শাহ রেজা কিবরিয়া (হবিগঞ্জ-১)। এ ছাড়া মফিজুল ইসলাম খান কামাল (মানিকগঞ্জ-৩) ও জানে আলম (চট্টগ্রাম-১০)-এ মনোনয়ন চাইছে গণফোরাম থেকে।
জেএসডি
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব (লক্ষ্মীপুর-৪), তানিয়া রব (ঢাকা-১৮), আবদুল মালেক রতন (কুমিল্লা-৪)। জেএসডি আরও দু-একটি আসনের জন্য দরকষাকষি করছে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি বলে জানা গেছে। এসব আসনের মধ্যে রয়েছে-তৌহিদ হোসেন (চুয়াডাঙ্গা-১), মাসুম এম মহসীন (ঢাকা-১৮), শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন (ফেনী-৩), বেলায়েত হোসেনের জন্য (লক্ষ্মীপুর-২)।
কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ
কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নাম (টাঙ্গাইল-৪) ও (টাঙ্গাইল-৮) এ দুই আসনের একটির জন্য থাকছে। (ঢাকা-১৩) আসনেও তার নাম রয়েছে।সে ক্ষেত্রে (টাঙ্গাইল-৮) আসনের বদলে কাদের সিদ্দিকী রাজি হলে (ঢাকা-১৩) আসন ছাড়বে বিএনপি। এর বাইরে ইকবাল সিদ্দিকী (গাজীপুর-৩) আসনে রয়েছেন।গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানিয়েছেন ইকবাল সিদ্দিকী।তিনি জানান, তারা ৪৩ আসনের জন্য একটি তালিকা ড. কামাল হোসেনের কাছে দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানানো হয়েছে।
নাগরিক ঐক্য
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে (বগুড়া-২) আসনের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়ার পর তিনি আরও দু-তিনটি আসনের বিষয়ে জোরালো অবস্থান নেন। এর মধ্যে দলের এসএম আকরাম হোসেন (নারায়ণগঞ্জ-২) আসনটি অন্যতম।
জোটের মনোনয়নের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমে বলেন, বিএনপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। জোট ও ফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করে বাকিগুলো চূড়ান্ত করা হবে। অপেক্ষাকৃত যোগ্য, দক্ষ ও জনপ্রিয় নেতারাই দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন।