
Indo-Pacific Humpbacked Dolphin
গোলাপি ডলফিনকে পর্তুগিজ ভাষায় বোতো বলা হয়। তবে আমাজন রিভার ডলফিন বা পিঙ্ক রিভার ডলফিন নামেই এদের পরিচিতি বেশি।
ইংরেজি নাম: Indo-Pacific Humpbacked Dolphin
বৈজ্ঞানিক নাম: Sousa chinensis
বর্ণনাঃ
পূর্ণ বয়স্ক একটি পুরুষ গোলাপি ডলফিনের ওজন ১৮৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। এদের দৈর্ঘ্য হয় আড়াই মিটার পর্যন্ত। একটি পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী গোলাপি ডলফিনের ওজন দুই দশমিক ১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে এবং ওজন হয় প্রায় ১৫০ কিলোগ্রাম। এদের শরীর তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ডলফিনের চেয়ে ভারী এবং সুগঠিত। লম্বা ঠোঁট এবং চোয়ালের মধ্যে এদের ২৫ থেকে ২৮ জোড়া বড় দাঁত থাকে। বড় এবং শক্ত এই দাঁতের সাহায্যে এরা শিকার ধরে। আমাজন রিভার ডলফিন বা পিঙ্ক রিভার ডলফিনের গড় আয়ু প্রায় ৩০ বছর। তবে এই প্রজাতির ডলফিনের ৪০ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকার নজিরও আছে।
স্বভাবঃ
গোলাপি ডলফিনরা কিন্তু মিঠা পানির ডলফিন। মিঠা পানির ডলফিনরা শুধু নদী আর খালেই থাকে। কখনোই নোনা পানিতে, মানে সাগরে যায় না। আর এই আমাজনের গোলাপি ডলফিনরা আরও এক কাঠি বেশি। ওরা শুধু আমাজন নদীতেই থাকে। আর কোত্থাও যায় না। তাই ওদের আমাজন নদীর ডলফিন ও বলা হয়। ওদের সারাটা জীবন আমাজন নদীতেই কেটে যায়। এরা নির্জন থাকতে পছন্দ করে। সাধারণত ডলফিন দলবদ্ধ হয়ে থাকার জন্য বিখ্যাত। তবে গোলাপি ডলফিন একাকী থাকতে পছন্দ করে। দুই থেকে চার সদস্যের ছোট দলেই এরা থাকে। তবে বেশি খাদ্য সমৃদ্ধ অঞ্চলে এদের বড় দলও দেখা যায়। ছোট দলে থাকলেও এরা অসম্ভব কৌতূহলী প্রাণী। সহজেই গোলাপি ডলফিন মানুষ কিংবা অন্য প্রজাতির সংস্পর্শে আসে।
প্রজননঃ
সাধারণত মার্চ থেকে এপ্রিলে ডলফিনরা বাচ্চা দেয়। ডলফিনরা কিন্তু ডিম দেয় না। মানুষের মতোই ওরাও মায়ের পেটে কিছুদিন থাকে, তারপর মানুষের মতোই মায়ের পেট থেকে আস্ত বেরিয়ে আসে। গোলাপি ডলফিনরা মায়ের পেটে মানুষের সমানই সময় কাটায়, ৯ থেকে ১২ মাস। তারপর বেরিয়ে এলে প্রথম-প্রথম কিছুদিন বাবা-মার সঙ্গেই ঘুরে বেড়ায়। বড়ো হওয়ার পর আলাদা হয়ে যায়।
খাদ্য তালিকাঃ
মাছ এদের প্রধান খাবার।
অবস্থাঃ
২০০২ সালে প্রথমবারের মতো ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটির একটি জরিপে বাংলাদেশে গোলাপি ডলফিনের অস্তিত্বের কথা জানানো হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটিকে বঙ্গোপসাগরে দেখা যায়। কিন্তু সুন্দরবনের সীমানায় এই প্রথমবারের মতো এদের দেখা গেল। পৃথিবীজুড়ে গোলাপি ডলফিনকে বিপন্নপ্রায় প্রজাতি হিসেবে মনে করা হয়।