Ganges River Dolphin
শুশুক একটি স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণী। বাংলাদেশে এখন এটি বিপন্ন প্রাণী হিসেবে পরিচিত। এরা শুশুক মাছ, শিশু বা শিশু মাছ, হউম মাছ, হচ্ছুম মাছ ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশে ২ ধরনের শুশুক পাওয়া যায়। একটির বৈজ্ঞানিক নাম Orcaella brevirostris এবং অপরটির বৈজ্ঞানিক নাম Neophocaena phocaenoides ।
ইংরেজি নাম Ganges River Dolphin, Ganges Dolphin South Asian River Dolphin বা Blind River Dolphin.
বিবরণঃ
নদীর শুশুক গাট্টাগোট্টা ও কোমল দেহের প্রাণী। ওদের চোয়ালসহ নাক বেশ লম্বা। দেহের দৈর্ঘ্য ২.২-২.৬ মিটার ও ওজন ৫১-৮৯ কেজি। সদ্য প্রসবকৃত বাচ্চা ৭০-৯০ সেন্টিমিটার লম্বা। দেহের রং ধূসর বা মেটে-বাদামি, অনেক সময় পিঠ কিছুটা কালচে হয়। পেট গোলাকার ও পিঠের কুঁজ ছোট। লম্বা ঠোঁটে রয়েছে ধারালো দাঁত। মুখ ওপরের দিকে বাঁকানো। ফ্লিপার বা ডানা বৈঠার মতো। পিঠের পাখনা অত্যন্ত ছোট। ওরা অন্ধ প্রাণী। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম হলেও আকারে স্ত্রী বড় হয়।+
প্রজননঃ
নদীর শুশুক সারা বছরই প্রজনন করতে পারে, তবে অক্টোবর থেকে মার্চে বেশি করে। স্ত্রী শুশুক দু-তিন বছর পরপর প্রায় ১০ মাস গর্ভধারণের পর একটি করে বাচ্চার জন্ম দেয়। শিশু মাতৃস্তন থেকে দুধ চুষে না, দুধের ধারা তার মুখেই পৌঁছয়। বাচ্চার দেহের রং হয় চকলেট-বাদামি। বাচ্চারা প্রায় ১০ বছরে বয়োপ্রাপ্ত হয়। আয়ুস্কাল ১৮-২২ বছর।
বিচরণঃ
সাধারণত এরা উপকূল ও সমুদ্রে বিচরণ করে। বর্ষাকালে বড় বড় নদীতেও এদের দেখা পাওয়া যায়। এরা মাঝে মাঝে পানি থেকে উপরে লাফ দেয় এবং দল বেঁধে চলে।
খাদ্য তালিকাঃ
মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি প্রধান খাদ্য।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশে এ জাতীয় প্রাণীর একটিই প্রজাতি আছে, আর সেটি পাখনাহীন শুশুক, বাস করে সুন্দরবন, হাতিয়া, মহেশখালি, কুতুবদিয়া মোহনায়, অল্প সংখ্যায় নাফ নদীতে। শুশুকের মধ্যে পাখনাহীন শুশুকই সবচেয়ে ছোট, প্রায় ১.৫ মিটার লম্বা, দাঁতের সংখ্যা ১৫-২১, কপাল তরমুজাকার, দেহবর্ণ ধূসর থেকে কালো, পেট সাদাটে।
অবস্থাঃ
প্রজাতিটি বিরল এবং CITES (Convention on International Trade on Endangered Species of Fauna and Flora)-র ১ম পরিশিষ্টের অন্তর্ভুক্ত এবং বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন (১৯৭৪) দ্বারা সুরক্ষিত।