Blue bull
নীলগাই ভারতীয় উপমহাদেশে অ্যান্টিলোপ জাতীয় প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বৃহদাকৃতি। পুরুষ অ্যান্টিলোপ নীলগাও নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Blue bull
বৈজ্ঞানিক নাম: Bocephalus tragocamelus
বর্ণনাঃ
পুরুষ নীলগাইয়ের উচ্চতা সাধারণত ১৩০-১৪০ সেন্টিমিটার এবং মহিলা নীলগাই আকারে একটু ছোট হয়। শিঙের দৈর্ঘ্য গড়ে ২০ সেন্টিমিটার। পুরুষ নীলগাইয়ের বর্ণ গাঢ় ধূসর, প্রায় কালচে রঙের।। অনেক সময় গায়ে নীলচে আভা দেখা যায় বলে এদের নীলগাই নামকরণ। মহিলা নীলগাই ও শাবকের বর্ণ লালচে বাদামী কিন্তু খুরের উপরের লোম সাদা এবং প্রত্যেক গালে, চোখের নিচে ও পেছনে দুটি সাদা ছোপ থাকে। ঠোঁট, থুতনি, কানের ভেতরের দিক ও লেজের নিচের তলদেশ সাদাটে। ঘাড়ে বন্য শূকরের কেশরের মত ঘন লোম থাকে। পুরুষ নীলগাইয়ের শুধু শিং হয়। শিঙের গোড়া ত্রিকোণাকৃতি হলেও ডগা বৃত্তাকার।
স্বভাবঃ
নীলগাই ছোট ছোট পাহাড় আর ঝোপ-জঙ্গলপূর্ণ মাঠে চড়ে বেড়াতে ভালবাসে। ঘন বন এড়িয়ে চলে। সচরাচর ৪ থেকে ১০ সদস্যের দল নিয়েই নীলগাই ঘুরে বেড়ায়। দলে কখনও ২০ বা তার বেশি সদস্যও থাকতে পারে। সকাল আর বিকেলে খাওয়ার পাট চুকিয়ে দিনের বাকি সময়টা গাছের ছায়ায় বসে কাটায়। আত্মরক্ষার প্রধান উপায় দৌড়ে পালানো। দ্রুতগামী ও শক্তিশালী ঘোড়ার পিঠে না চড়ে নীলগাই ধরা প্রায় অসম্ভব।
প্রজননঃ
প্রজনন ঋতু অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি। এক বছর পর পর স্ত্রীরা বংশবৃদ্ধি করতে পারে। গর্ভাবস্থা ৮ থেকে ৯ মাস স্থায়ী হয়। তারপরে একটি একক বা যমজ বাছুর জন্মে। তারা জন্মের ৪০ মিনিটের মধ্যে দাঁড়াতে সক্ষম হয়, এবং চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যে চারায়। গর্ভবতী মহিলারা সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে নিজেদের আলাদা করে ফেলে। নীলগাই বাছুরগুলিকে তাদের জীবনের প্রথম কয়েক সপ্তাহ লুকিয়ে রাখা হয়। বাছুর, প্রধানত পুরুষ, ঘাড়-লড়াই করে খেলাধুলা করে। অল্পবয়সী পুরুষরা দশ মাস বয়সে তাদের মাকে ছেড়ে যাবে। নীলগাইদের জীবনকাল সাধারণত ১০ বছর।
খাদ্য তালিকাঃ
মহুয়া গাছের রসালো ফুল এদের দারুণ পছন্দ।
বিস্তৃতিঃ
ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলেই নীলগাই দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মালাবার উপকূল ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন অঞ্চলগুলো বাদে উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে কর্ণাটক প্রদেশ পর্যন্ত এদের দেখা মেলে। এছাড়া পাকিস্তান ও নেপালের ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় নীলগাই দেখা যায়। চীনেও নীলগাই রয়েছে বলে জানা যায়।
অবস্থাঃ
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, বিহারে একটি নীলগাইকে হত্যার অংশ হিসাবে একটি খননকারক দিয়ে জীবন্ত কবর দেওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছিল। রাজ্য বন বিভাগ দায়ীদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত শুরু করেছে বলে দাবি করেছে।