Sumatran serow
বনছাগল ছাগল জাতীয় যুগ্ম-খুর-যুক্ত চতুষ্পদ যা মালয় উপদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের স্থানীয়। বর্তমানে এই সেরোর প্রজাতিটিকে সুমাত্রীয় সেরো ডাকা দেয়া হলেও পূর্বে এর নাম ছিল "মূলভূখন্ডীয় সেরো" যেহেতু মূলভূখন্ডের অন্যান্য সেরো প্রজাতি যেমন চায়না সেরো, লাল সেরো এবং হিমালয়ী সেরোকে এই প্রজাতির উপপ্রজাতি ধরা হতো।
ইংরেজি নাম: Sumatran serow
বৈজ্ঞানিক নাম: Capricornis sumatraensis
বর্ণনাঃ
বনছাগল স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। দেহের দৈর্ঘ্য ১.০ থেকে ১.১ মিটার। পুরুষ ৭০ থেকে ৭৫; স্ত্রী ৫০ থেকে ৫৫ কেজি। এদের পাতলা ও অমসৃণ লোমবিশিষ্ট ত্বক। গায়ের রং লালচে বাদামী বা পিংগলাভ। ঘাড়ের উপরের পশমগুলি কাল এবং লম্বাটে। শিং ৯ থেকে ১০ ইঞ্চি লম্বা এবং পেছন দিকে বাঁকানো থাকে। কানগুলি রামছাগলের মত বড় হলেও শক্ত এবং খাড়া বা সামান্য কাত হয়ে থাকে। লেজটি ছাগলের লেজের মত ছোট। হাটু থেকে পায়ের খুর পর্যন্ত কিছুটা সাদার ছোপ রয়েছে। খুরের রং কাল। পুরুষ ও স্ত্রী উভয়ের কাল শিং থাকে।
স্বভাবঃ
এরা সতর্ক অবস্থায় পা দুটি ফাঁক করে মাথা নুইয়ে দাঁড়ায়। মাঝে মাঝে সামনের পা তুলে জোরে তা ছুঁড়ে মারবে মাটিতে এবং নাক ও গলায় কিছুটা বাঁশির মত শব্দ তুলে পালিয়ে যাবে। কখনো আক্রমণও করে বসে। বনছাগল বনের ধারের বা পাহাড়ের ঢালে একাকী ঘুরে বেড়ায় ও খাবার সংগ্রহ করে। পাহাড়ের খাড়া ঢালে বা সমতলভূমিতে একইভাবে দ্রুতগতিতে চলতে পারে।
প্রজননঃ
বছরে একবার সাধারনত মে-জুন মাসে আট মাস গর্ভধারণের পর একটি বাচ্চা প্রসব করে। পাহাড়ের গুহায় ঘন ঘাসবনে বা পাথরের ফাঁকে ফাঁকে নিজে লুকায় ও বাচ্চাকে লুকিয়ে রাখে।
খাদ্য তালিকাঃ
ঘাস, বাঁশের কচি পাতা ও শেওলা খায়।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য বনাঞ্চলে এদের দেখা মিলে যদিও এদের জনসংখ্যা বর্তমানে সেখানে অতি সামান্য। বিশ্বজুড়ে সেরো হিসেবে পরিচিত হলেও বনে চলাফেরা করা ছাগলের মতো দেখতে বলে সেখানে এদের বনছাগল ডাকা হয়।
অবস্থাঃ
বাসস্থান ক্ষতি এবং শিকারের জন্যে বনছাগলের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন, যার কারণে আইইউসিএন লাল তালিকা অনুযায়ী এটি সংকটাপন্ন হিসেবে মূল্যায়িত।