
Bengal fox
বাংলা খেঁকশিয়াল একপ্রজাতির খেঁকশিয়াল। বাংলা খেঁকশিয়াল একটি মাঝারি আকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।
ইংরেজি নাম: Bengal fox
বৈজ্ঞানিক নাম: Vulpes bengalensis
বর্ণনাঃ
বাংলা খেঁকশিয়ালের পিঠ সাদা ডোরাসহ লালচে-ধূসর। দেহের পাশ পিঠের তুলনায় বেশি ধূসর। দেহতল সাদাটে। বুকের নিচের অংশ ও তলপেট ফ্যাকাশে লালচে-হলুদ কিংবা হালকা পীত-সাদা। অবসারণীর দিকে লালচে ভাব বেশি। এর কাঁধে কোন আড়াআড়ি ফিতার মত দাগ থাকে না। পায়ের বাইরের অংশ উজ্জ্বল লালচে। চোখের সামনে মাজলের পাশে একটি করে কালো চিতি থাকে। কানের বাইরের অংশ ধূসর ও ভিতরের অংশ সাদাটে। সাধারণত পিলেজ তামাটে-ধূসর। কানের কালচে-বাদামি পিলেজের প্রান্তদেশ কালো। বাংলা খেঁকশিয়ালের সবচেয়ে চোখে পড়ার মত অঙ্গটি হল এর বড় ঝাঁকড়া লেজ। লেজ ধূসর ও লেজের উপরিভাগ লালচে। লেজের আগা কালো। এদের মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য ৪৫-৬০ সেমি এবং লেজ ২৫-৩৫ সেমি। ওজন ১.৮-৩.২ কেজি। মাজল সরু এবং মাজলের উপরের অংশে লোমের ছোট পট্টি চোখে পড়ে।[৪] কান দেহের তুলনায় বড়। মাথা সরু। লেজ দেহের অর্ধেকেরও বেশি লম্বা। আঙুলের উপর ভর করে চলাফেরা করে। সামনের পায়ে আঙুল পাঁচটি ও পিছনে চারটি।
স্বভাবঃ
এ স্তন্যপায়ী প্রাণীটি কুকুর প্রজাতির সাথে সম্পৃক্ত। এরা খুব ধূর্ত, চঞ্চল ও দ্রুতবেগে দৌঁড়াতে সক্ষম। দলবদ্ধ হয়ে শিকারে বের হয় ও একত্রে থাকতে পছন্দ করে। তাদের ঘন, বিস্তৃত লেজ সহজেই দৃশ্যমান ও এর সাহায্যেই শনাক্ত করা সম্ভবপর। লেজের সাহায্যে সতর্ক সঙ্কেত প্রেরণ করে অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। লেজে চর্বি সঞ্চিত থাকে।
প্রজননঃ
এদের প্রজাতি ও পরিবেশের উপর নির্ভর করে শাবক প্রসব করে। খেঁকশিয়াল গড়ে ৪ থেকে ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১১টি শাবক প্রসব করে থাকে। বন্য পরিবেশে খেঁকশিয়াল ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু শিকারে পরিণত হওয়ার প্রেক্ষাপটে গড়পড়তা ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত বাঁচে। শিকারী, সড়ক দুর্ঘটনা এবং বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়াই এর প্রধান কারণ।
খাদ্য তালিকাঃ
বিভিন্ন ফলমূল,ছোট ছোট প্রাণী, ইঁদুর, ঘাসফড়িং, পাখি ও এর ডিম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এমনকি এরা পঁচা মাংসও খেয়ে থাকে।
বিস্তৃতিঃ
ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে এদের দেখা যায়। উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশে নেপালের তেরাই অঞ্চল থেকে ভারতের একেবারে দক্ষিণ পর্যন্ত এবং পশ্চিমে পাকিস্তানের সিন্ধু উপত্যকা থেকে পূর্বে বাংলাদেশ পর্যন্ত এদের বিস্তৃতি সীমাবদ্ধ।
অবস্থাঃ
বিগত কয়েক বছরে এদের সংখ্যা কমছে, তবে আশঙ্কাজনক হারে গিয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-২ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।