Yellow-throated Marten
হলুদগলা মার্টিন এক প্রকার মাংশাসী মাঝারি জাতের বেজি জাতীয় প্রাণী।
ইংরেজি নাম: Yellow-throated Marten
বৈজ্ঞানিক নাম: Martes flavigula
বর্ণনাঃ
এদের মাথার দিককার রং হালকা বাদামি, তবে ঋতুভেদে দেহের রং হয় দুই ধরনের—কমলা হলদে, নয়তো কালচে বাদামি। লেজের রং কালো। গলার রং মাখন হলদে। কান, চোখ ও মুখের আশপাশে সাদাটে লোম রয়েছে। মাথাসহ দেহ ৪০—৬০ সেন্টিমিটার লম্বা। আর লেজের দৈর্ঘ্য ৩৮ থেকে ৪৩ সেমি। ওজন গড়ে ৩ দশমিক ৪ কেজি। মার্টিন আকার-আয়তনে অনেকটা বেজির মতো। তবে রং অনেক বাহারি। এদের কান দুটো বেজির চেয়ে অপেক্ষাকৃত বড় এবং বিড়ালের মতো গোলাকৃতির। মূলত গেছো প্রাণী হওয়ায় এদের পা শক্তিশালী। লোমশ লম্বা লেজ গাছে ঝাঁপাঝাঁপির সময় ভারসাম্য রক্ষা করে।
স্বভাবঃ
মাংসাশী গোত্রের এই প্রাণীটি একা থাকতে পছন্দ করে। এরা নিশাচর, তবে দিনের বেলায়ও শিকার করে। মাটিতে, গাছে দুই জায়গায়ই শিকার ধরে। লম্বাটে শরীরের মার্টিন ছোট হলেও এদের চেয়ে বড় আকারের প্রাণী এরা কবজা করতে পারে। এদের ক্রান্তীয় বনভূমিতে দেখা যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তিন হাজার ফুট উপরে এদের অবস্থান।
প্রজননঃ
প্রজনন কাল গ্রীষ্মের শুরু অথবা শেষ দিকে। গর্ভকাল ১২০ দিনের। দুই থেকে পাঁচটি বাচ্চা দেয়। বাচ্চার সব দায় মা পালন করে। তিন থেকে চার মাস বাচ্চারা মায়ের সঙ্গে থাকে। বিপদে পড়লে, বিশেষ করে শত্রুর তাড়া খেলে মার্টিন পায়ু সংশ্লিষ্ট গ্রন্থি থেকে তীব্র বদ গন্ধ ছাড়ে।
খাদ্য তালিকাঃ
কাঠবিড়ালিই মার্টিনের অন্যতম খাদ্য। এ ছাড়া ঈগল, বনমোরগ, মথুরাসহ নানা জাতের পাখি এরা ধরে খায়। মাটিতে চলার সময় এরা লাফিয়ে চলে। তখন ইঁদুর, সাপ, কেন্নো এদের হাত থেকে নিস্তার পায় না। মাংসাশী হলেও এরা রসাল ফল, জাম খেতে পছন্দ করে।
বিস্তৃতিঃ
আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে, ভারতের হিমালয়, নেপাল এবং ভুটান, কোরীয় উপদ্বীপ, দক্ষিণ চীন, তাইওয়ান এবং পূর্ব রাশিয়ায় দেখা যায়। দক্ষিণে, এর পরিসর বাংলাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয় উপদ্বীপ, লাওস, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনাম পর্যন্ত বিস্তৃত।
অবস্থাঃ
হলুদগলা মার্টিন আন্তর্জাতিকভাবে বিপন্নপ্রায় প্রাণী। ঝলমলে চামড়াই এদের প্রধান শত্রু। শিকারিদের লক্ষ্য থাকে ওই চামড়া সংগ্রহ। বড় হুমকির অভাবের কারণে এটিকে IUCN রেড লিস্টে ন্যূনতম উদ্বেগ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।