Indian Muntjac
মায়ামৃগ, রুরু হরিণ বা কাকার নামেও পরিচিত। কুকুরের মতো ডাকে বলে অনেকে এদের কুকুরে হরিণ বলেও ডাকে। মায়া হরিণ বা কাকর হরিণ হরিণ প্রজাতির অন্যতম খর্বকায় ও লাজুক সদস্য। ছোট আকারে লালচে বাদামী পিংগল রং এর ফোঁটা বিহীন এ হরিণের চলাফেরা ও জীবনধারণ খুবই চমৎকার।
ইংরেজি নাম: Indian Muntjac or Barking Deer
বৈজ্ঞানিক নাম: Muntiacus muntjak
বর্ণনাঃ
মায়া হরিণ দেখতে চকচকে লালচে-বাদামি, বিশেষ করে পিঠ ও লেজের ওপরের অংশ। দেহের দু’পাশটা হালকা বাদামি। পেট ও লেজের নিচের অংশ সাদা। ছোট ছানার গায়ে সাদা ফোটা থাকে। এরা লম্বায় ০.৯ মিটার পর্যন্ত হয়। কাঁধ পর্যন্ত উচ্চতায় ০.৫০ থেকে ০.৭৫ মিটার। ওজন প্রায় ১৪ থেকে ২৮ কেজি। লেজ ১৭ সেন্টিমিটারের মতো। হরিণের দু’ডালওয়ালা শিং ১৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার হতে পারে।
স্বভাবঃ
এরা একাকী ঘোরাফেরা করে। তবে দু’তিনটির দলও দেখা যায়। সকাল-সন্ধ্যা ডাকাডাকি করে। ভয় পেলে ঘন ঘন ডাকতে থাকে। দৌড়ে বেশ পটু। এদের চোয়ালে দুটি লম্না দাঁত আত্মক্ষার প্রধান অস্ত্র। মানুষ বা মাংসাশী বন্যপ্রাণী এদের প্রধান শত্রু।
প্রজননঃ
এরা এক বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। সাধারণত শীতকালে প্রজনন করে। গর্ভধারণকাল ৬ থেকে ৭ মাস। একটি বাচ্চার জন্ম দেয়। অনেক সময় দু’টি বাচ্চাও হতে পারে। আয়ুষ্কাল ১৫ থেকে ২০ বছর।
খাদ্য তালিকাঃ
ঘাস- লতাপতা ছাড়াও পাখির ডিম এমনকি ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণীও মায়া হরিণের খাদ্য।
বিস্তৃতিঃ
উত্তর- পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, ইন্দোনেশিয়া ও এর দ্বীপসমূহ মায়া হরিণের আবাসস্থল। এরা সাধারণত জলের আশেপাশে বসবাস করে। পুরুষ মায়া হরিণ তার নিজস্ব এলাকায় বসবাস করে যা একাধিক স্ত্রী- মায়া হরিণের এলাকাকে স্পর্শ করে।
অবস্থাঃ
একসময় সুন্দরবনসহ দেশের সব পাহাড়ি বনাঞ্চলেই এদের দেখা যেত। বর্তমানে সংখ্যা কম। মাংস, চামড়া ও শিংয়ের লোভে মানুষ এদের প্রতিনিয়ত শিকার করছে। এরা ভারতীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন,১৯৭২ দ্বারা এখানে সুরক্ষিত। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।