Fishing Cat
মেছোবাঘ, বাঘরোল বা মেছো বিড়াল মাঝারি আকারের বিড়ালগোত্রীয় একধরনের স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণী।
ইংরেজি নাম: Fishing Cat
বৈজ্ঞানিক নাম:Prionailurus viverrinus
বর্ণনাঃ
বাংলাদেশে মেছোবাঘের গো-বাঘা বা লামচিতা নামে পরিচিত। অনেক এলাকায় চিতা বাঘ হিসাবেও পরিচিত এরা। এক সময় দেশজুড়ে ছিলো তাদের বিচরণ। তবে এখন প্রাকৃতিক বন বাদে অন্যত্র মেছোবাঘ মহা বিপন্ন প্রাণী।লেজ বাদে শরীরের মাপ ৭০-৮০ সেন্টিমিটার। লেজের মাপ ৬০-৬৫ সেন্টিমিটার। মেছো বাঘ সাধারণত ১২-১৫ কেজি ওজনের হয়।
স্বভাবঃ
মেছোবাঘ সাধারণত নদীর ধারে, পাহাড়ি ছড়া এবং জলাভূমিতে বাস করে। এরা সাঁতারে পারদর্শী হওয়ায় এধরণের পরিবেশে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। এদের গায়ে ছোপ ছোপ চিহ্ন থাকার জন্য চিতাবাঘ বলেও ভুল করা হয়। বাঘরোল সাধারণত নদীর ধারে, পাহাড়ি ছড়া এবং জলাভূমিতে বাস করে। এরা সাঁতারে পারদর্শী হওয়ায় এধরনের পরিবেশে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে।
প্রজননঃ
এদের প্রজনন মৌসম জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারি মাসে। গর্ভাবস্থার সময়কাল ৬৩-৭০ দিন স্থায়ী হয়। নারী মেছোবাঘ দুই বা তিনটি বিড়ালছানা জন্ম দেয়। জন্মের সময় তাদের ওজন প্রায় ১৭০ গ্রাম এবং ১ মাস বয়সের মধ্যে সক্রিয়ভাবে চলাফেরা করতে সক্ষম হয়। তারা পানিতে খেলতে শুরু করে এবং প্রায় দুই মাস বয়সে শক্ত খাবার গ্রহণ করে, কিন্তু ৬ মাস বয়স পর্যন্ত তাদের দুধ ছাড়ানো হয় না। প্রায় সাড়ে আট মাস বয়সে তারা পূর্ণ বয়স্ক আকারে পৌঁছায়, ১১ মাসের মধ্যে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক ক্যানাইন দাঁত অর্জন করে এবং প্রায় ১৫ মাস বয়সে যৌনভাবে পরিপক্ক হয়। তারা ১০ বছর পর্যন্ত বন্দী অবস্থায় বেঁচে থাকে।
খাদ্য তালিকাঃ
সাপ, বুনো খরগোশ, পাখি, কচ্ছপ, শিয়াল, কুকুর, বাছুর, ছাগল, হাঁস-মুরগি, প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খায়।
বিস্তৃতিঃ
এদের আবাসস্থল থাইল্যান্ড,ব্রাজিল, কোস্টা রিকা, বাংলাদেশ, ভারত, বলিভিয়া, ক্যাম্বোডিয়া, লাউস, শ্রীলঙ্কায় ।
অবস্থাঃ
বিগত কয়েক দশকে বাঘরোলের সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। জনবসতি স্থাপন, কৃষিজমিতে রূপান্তর ও অন্যান্য কারণে বাঘরোলের আবাসস্থল জলাভূমিগুলো দিন দিন সংকুচিত ও হ্রাস পাওয়াই এর মূল কারণ। তাই আইইউসিএন ২০০৮ সালে মেছোবাঘকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।