
Bengal slow loris
লজ্জাবতী বানর বা বাংলা লজ্জাবতী বানর বা লাজুক বানর হচ্ছে লরিসিডি পরিবারের একটি বানর প্রজাতি।
ইংরেজি নাম: Bengal slow loris বা northern slow loris
বৈজ্ঞানিক নাম: Nycticebus bengalensis
বর্ণনাঃ
লজ্জাবতী বানরের মাথাসহ দেহ ৩৩ সেমি লম্বা এবং ওজন প্রায় ১.২ কেজি। লজ্জাবতী বানরের দেহ হালকা বাদামি থেকে ধূসর রঙের ছোট নরম পশম দ্বারা আবৃত। এদের মাথা গোলাকৃতি, বাদামি রঙের বলয়যুক্ত পেঁচার মতো চোখ, পশমের মধ্যে প্রায় ঢেকে থাকা খাটো লেজ এবং মাথার ওপর থেকে পিঠ পর্যন্ত লম্বা বাদামি দাগ দেখতে পাওয়া যায়।
স্বভাবঃ
এরা নিশাচর প্রাণী। এই বানর দিনের বেলায় গাছের উঁচু ডালে নিজেদের আড়াল করে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। লজ্জাবতী বানর গাছের উঁচু শাখায় থাকতে পছন্দ করে। বাংলাদেশে পাহাড়ি চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়, তবে আর্দ্র পত্রঝরা বনে থাকার তথ্য রয়েছে। লজ্জাবতী বানর অত্যন্ত শক্তভাবে যেকোন কিছু ধরতে পারে। এরা বৃক্ষবাসী এবং সাধারণত একাকী বাস করে। নিশাচর প্রাণীগুলো দিনে গাছের খোঁড়লে বা ঘন পাতার আড়ালে অন্ধকারে ঘুমিয়ে কাটায়। ঘুমানোর সময় শরীরকে গোল বলের মতো করে রাখে। বিরল, নিশাচর ও লাজুক হওয়ায় দিনে সহজে চোখে পড়ে না। সচরাচর একাকী বা জোড়ায় দেখা যায়। মূলত গাছে গাছেই থাকে, সহজে মাটিতে নামে না।
প্রজননঃ
লজ্জাবতী বানর বছরের যে কোনো সময় প্রজনন করতে পারে। ১৮৫-১৯৭ দিন গর্ভধারণের পর স্ত্রী একটি বাচ্চা প্রসব করে। পুরুষ ১৭ মাসে ও স্ত্রী ১৮-২৪ মাসে বয়োপ্রাপ্ত হয়। আয়ুস্কাল ১৫-২৫ বছর।
খাদ্য তালিকাঃ
গাছের আটা, কষ, ছোট ছোট পোকামাকড়, ছোট পাখি ও এবং বিভিন্ন প্রাণিদের ডিম এদের খাদ্যের তালিকায়ে রয়েছে।
বিস্তৃতিঃ
এদেরকে জামালপুর জেলা সংলগ্ন গারো পাহাড়ের জঙ্গলসহ দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ব বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার, চীন, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে এদের দেখা মেলে।
অবস্থাঃ
লজ্জাবতী বানর আইইউসিএন লাল তালিকায় সংকটাপন্ন হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।