বিন্টুরং-Binturong
বিন্টুরং একটি বৃহদাকৃতির দূষ্প্রাপ্য ও ভিভারিডি পরিবারভূক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণী। বিন্টুরংকে প্রায়শঃই "বিয়ারক্যাট" বা ভালুক-বিড়াল বলা হয়। কারণ এ প্রাণীটি ভল্লুক এবং বিড়াল- উভয়ের মত দেখতে।
ইংরেজি নাম: Binturong
বৈজ্ঞানিক নাম: Arctictis binturong
বর্ণনাঃ
বিন্টুরংয়ের ঘন ও কালো রঙের লোম রয়েছে। বাঁকানো, লম্বা লেজ এবং মুখে লম্বাটে ও সাদা রঙের লোম আছে। তারা হাতের বিকল্প হিসেবে লেজ ব্যবহার করে কোন কিছুকে আঁকড়িয়ে ধরে। ছোট্ট শাবকগুলো কখনও কখনও তাদের লেজ দিয়ে গাছে ঝুলে থাকতে পারে। এগুলো লম্বায় প্রায় ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এদের ওজন প্রায় ৩০ কেজির মতো হয়ে থাকে। অন্যান্য কয়েক প্রজাতির প্রাণীর ন্যায় বিন্টুরং গন্ধ শুঁকে অন্যান্য বিন্টুরংয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। এদের জীবনকাল প্রায় ৩০ বছরের মতো হয়ে থাকে।
স্বভাবঃ
বিন্টুরং বেশ লাজুক এবং আড়ালে আবডালে থাকতে ভালবাসে। গহীন বনের গাছের খোঁড়ল, ডাল-পালা ও পাতার মধ্যে খুব সহজেই এরা মিশে থাকতে পারে। প্রধানত বৃক্ষচর হলেও মাটিতে স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারে। লেজের ডগা আংটার মত বাঁকা বলে খুব সহজে ডালে ভর দিয়ে হাঁটতে পারে। দিনের বেশিরভাগ সময় লেজ আর মাথা পেটের দিকে গুটিয়ে গুটিশুটি মেরে পড়ে থাকে। দিনের বেলা কদাচিৎ ডাকে। তাছাড়া এরা ডাল থেকে ডালে লাফ দিতে পারে এবং ভূমিতেও লাফ দেয়।
প্রজননঃ
স্ত্রী বিন্টুরং ৮১ দিনে গর্ভধারণের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করে। তবে, ৯১ দিন পর্যন্ত এটি গর্ভধারণ করতে পারে। প্রায় শতাধিক স্তন্যপায়ী প্রজাতির প্রাণীদের অন্যতম হিসেবে এটি বাচ্চাপ্রসবের জন্যে বিলম্ব ঘটাতে পারে। সচরাচর ২টি বাচ্চা প্রসব করলেও মাঝে মাঝে ৬টি বাচ্চা প্রসব করতে পারে। যৌন সক্ষমতা ১৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
খাদ্য তালিকাঃ
বিন্টুরং ফল খেতে ভালবাসে। এছাড়াও, ছোট ছোট প্রাণীকে গন্ধ শুঁকে অনুসরণের মাধ্যমে শিকার করে জীবনধারণ করে।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, গণচীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে বিন্টুরং প্রাণীটিকে দেখা যায়।
অবস্থাঃ
আবাসস্থলের ব্যাপক প্রতিকূলতা ও ধ্বংসযজ্ঞ এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রয়োগ হবার প্রেক্ষাপটে পলয়ান বিন্টুরং সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পৌঁছেছে। এছাড়াও, এটির লোম এবং পোষা প্রাণী হিসেবে ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধিও এর প্রধান কারণ। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।