Top 10 colleges in Bangladesh
বাংলাদেশের সেরা ১০ কলেজ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে সেরা ১০ কলেজ হচ্ছে-
১.রাজশাহী কলেজ
রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের রাজশাহী শহরে অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৮৭৩ সালে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজ এর পরে রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের ৩য় প্রাচীনতম কলেজ। রাজশাহী জেলা স্কুলে একজন মুসলমান ছাত্রসহ মোট ছয়জন ছাত্র নিয়ে রাজশাহী কলেজের এফ.এ ক্লাস শুরু হয় ১৮৭৩ সালের ১ এপ্রিল। শুরুর দিকে এই কলেজে কেবল ছাত্ররাই ভর্তি হতে পারত এবং ১৯৩০ সালে কলেজে ছাত্রের সংখ্যা ছিল প্রায় এক হাজার। ১৯৩১ সালে কলেজটিতে ছাত্রী ভর্তি শুরু হয়। ১৯৭০ সালে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১,৮৪০, তন্মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল কেবল ৩০০। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর কলেজের পরিসর ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায় এবং ১৯৯০ সালে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪,৭৩২ যাদের মধ্যে ছাত্রী ১,৩৫২। বর্তমানে (২০১০) কলেজে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৫,০০০ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৯৮।
বাংলাদেশে এই কলেজ হতেই সর্বপ্রথম মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করা শুরু হয়। কলেজটি রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থলে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এর পাশে অবস্থিত। এই প্রাচীন কলেজের পাশে অবস্থিত হবার কারণে স্কুলটির নাম কলেজিয়েট রাখা হয়েছিলো । এটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স ও সম্মান ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। ১৯৯৬ সাল থেকে এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র নথিভুক্ত করা বন্ধ করা হলেও বর্তমানে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে পুনরায় ভর্তি করা হচ্ছে।
গরীব, মেধাবী ও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য রয়েছে বৃত্তি ও পুরস্কার। এর মধ্যে মোহিনী-মোহন প্রাইজ ফান্ড, কে.সি সরকার বৃত্তি, রানী মনোমোহিনী বৃত্তি, রাজশাহী কলেজ বৃত্তি, মেয়ো মেমোরিয়াল বৃত্তি, মোহসীন স্টাইপেন্ড উল্লেখযোগ্য। নির্বাচনী পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের জন্য ‘আবু তালেব অ্যাওয়ার্ড ফর মেরিটোরিয়াস স্টুডেন্টস’ এবং অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ‘রাজশাহী কলেজ অ্যাওয়ার্ড ফর মেরিটোরিয়াস স্টুডেন্টস’ পুরস্কার রয়েছে।
রাজশাহী কলেজ ফুটবল, হকি, ক্রিকেট, লন টেনিস প্রভৃতি খেলাধুলায় বিশেষ কৃতিত্ব দেখিয়ে আসছে। এই কলেজের ছাত্র ও শিক্ষকবৃন্দ ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
২.বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ
১৮৮৯ সালের ১৪ জুন অশ্বিনী কুমার দত্ত তাঁর বাবা ব্রজমোহন দত্তের নামে সত্য, প্রেম, পবিত্রতার মহান আদর্শে ১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বি এম স্কুল ক্যাম্পাসে ব্রজমোহন কলেজ স্থাপন করেন।ব্রজমোহন কলেজ বা বি.এম কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে বরিশাল শহরে অবস্থিত। ১৯৬৫ সালে কলেজটির জাতীয়করণ করা হয় ও বর্তমানে কলেজটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত। কলেজটিতে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ২২টি বিষয়ে ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ১৯টি বিষয়ে পাঠদান করে থাকে।কলেজে ছাত্রদের জন্য ৩টি (মুসলিম হোস্টেল, মহাত্মা অশ্বিনীকুমার হোস্টেল, কবি জীবনানন্দ দাশ হিন্দু হোস্টেল) এবং মেয়েদের জন্য চারতলা ভবনের ১টি হোস্টেল (বনমালী গাঙ্গুলী মহিলা হোস্টেল) রয়েছে। কলেজের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে মোট বইয়ের সংখ্যা ৪০,০০০। এখানে ১টি বাণিজ্য ভবন, ২টি কলা ভবন, একটি অডিটোরিয়াম, ৪টি বিজ্ঞান ভবন ও ৩টি খেলার মাঠ রয়েছে। এছাড়া দুই প্রান্তে দুটি দিঘি কলেজের সৌন্দর্যকে করে তুলেছে মনোমুগ্ধকর
৩.বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ
১৯৩৮ সালের ৪ এপ্রিল বগুড়ায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে খাঁন বাহাদুর মোহাম্মদ আলীকে সভাপতি এবং মৌলভী আব্দুস সাত্তারকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠিত হয়। এই কলেজটি ১৯৩৯ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। অবিভক্ত বঙ্গে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব স্যার আজিজুল হক এর নামে কলেজটির নামকরণ করা হয়েছে।শুরুতে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী ছিল কোন ছাত্রী ছিল না। প্রথম ব্যাচের ছাত্রদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া তারা হলেন মোজাম পাইকার, আমীর আলী, শফিকুর রহমান, আব্দুল মালেক নূরুল ইসলাম ভোলা প্রমুখ।’’ ১৯৪১ সালে কলেজের প্রথম ব্যাচের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় ১৫২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৭ জন পরীক্ষায় পাশ করে। এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ০৮ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ৬৪ জন এবং তৃতীয় বিভাগে ৩৫ জন পাশ করে। পাশের হার ছিল ৬৯.২%। অথচ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হার ছিল ৬৩.৪%। জানা যায় ১৯৪৩ সাল থেকে কলেজে ছাত্রী ভর্তি শুরু হয় এবং এই সংখ্যা ছিল ৮ থেকে ১২ জন। পরবর্তীতে এই সংখ্যা কিছু বৃদ্ধি পায়। এরপর ১৯৫৩ সাল পর্যমত্ম ছাত্রীরা সকালের শিফ্টে বর্তমান ভি.এম গার্লস স্কুলে ক্লাশ করত। ঐ বৎসরই কলেজে সহ শিক্ষা চালু হলে এই প্রতিবন্ধকতার অবসান ঘটে, উজ্জীবিত হয় শিক্ষার মহৎ ও মানবিক উদ্দেশ্য, এতদিন যা সম্প্রদায়িকতার রোষানলে পরে পদদলিত হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠার মাত্র ২ বছর পর, অর্থাৎ ১৯৪১ সালে কলেজে, অর্থনীতি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে দু’বছর মেয়াদী সম্মান শ্রেণী ও বি.এ পাস কোর্স চালুর অনুমতি লাভ করে। ড. কে. এম ইয়াকুব আলীর মতে, ‘তদানীমত্মন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এটিই প্রথম কলেজ যেখানে সেসময় সম্মান শ্রেণী চালুর অনুমতি দেওয়া হয়। এর কিছুকাল পরে ১৯৫৪-৫৫ শিক্ষাবর্ষে কলেজটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হয় এবং আরবী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে তিন বছর মেয়াদী সম্মান শ্রেণী চালু করা হয়। সরকাররিকরনের পর কলেজে বাংলা, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে সম্মান পড়ানোর পাশাপাশি বি.এ,বি.কম, বি.এস.সি, আই.এ, আই.কম, আই.এস.সি চালু হয়। ১৯৭২-৭৩ সালে সম্মান কোর্সে বাংলা, ইহিতাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি, আরবি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, গণিত ও হিসাববিজ্ঞান চালু হয়। মাস্টার্স কোর্স অর্থনীতি, রাষ্ঠ্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান চালু করা হয়। ১৯৭৩-৭৪ সালে মাস্টার্স ও সম্মানে যথাক্রমে ৩১৭ ও ৬১৮ সহ মোট ৩,৭৮৭ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। শিক্ষক ছিলেন ৯০ জন।
৪.পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ
বাংলাদেশের পাবনা জেলায় অবস্থিত অবিভক্ত ব্রিটিশ বাংলায় প্রতিষ্ঠিত একটি ঐতিহাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৮৯৮ সালে শ্রী গোপাল চন্দ্র লাহিড়ী কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২১ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক থাকার সময় ৫টি বিষয়ে পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়। প্রথমদিকে পাঠদানের বিষয়গুলো ছিল- ইংরেজি, ইতিহাস, যুক্তিবিদ্যা, গণিত, বিজ্ঞান, সংস্কৃত, আরবী ও ফারসী। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বি,এস-সি কোর্স, ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে বি, এ কোর্স, ১৯৪৬ সালে কলেজে বায়োলজি বিভাগ, ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ও পরের বছর অর্থনীতিতে অনার্স, ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে পদার্থ বিজ্ঞান, গণিত ও ব্যবস্থাপনায় অনার্স কোর্স, পরের বছর বাংলা ও অর্থনীতিতে এম, এ কোর্স, ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, হিসাববিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন ও ইতিহাস বিষয়ে অনার্স কোর্স, পরবর্তীতে এ বিষয়গুলোতে ১৯৯৫ সালে মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স, পরের বছর প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স ও ২০১১ সালে ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিষয়ে অনার্স কোর্সে পাঠদান শুরু হয়।
৫.রংপুরের কারমাইকেল কলেজ
এটি ১৯১৬ সালে রংপুরে স্থাপিত হয় এবং এর নামকরণ করা হয় লর্ড ব্যারন কারমাইকেলের নামানুসারে। ৬১০ ফুট লম্বা ও ৬০ ফুট প্রশস্ত কলেজ ভবন যা বর্তমান বাংলা বিভাগ জমিদারি স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। যা বাংলার সমৃদ্ধশালী ইতিহাস মোঘলীয় নির্মাণ কৌশলকে মনে করিয়ে দেয়। কারমাইকেল কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯১৭ সালে কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক চালু করা হয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান ১৯২২ সালে ও বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ১৯২৫ সাল থেকে শুরু হয়। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল. দেশ বিভাগের পর ১৯৪৭ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৯৫৩ সালে নতুনভাবে স্থাপিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন করা হয় যা ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর কারমাইকেল কলেজ ১৯৯২ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়।
৬.আনন্দ মোহন কলেজ,ময়মনসিংহ
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরের অবস্থিত একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলেজটি ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে এ কলেজে স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তিত হয়। টাঙ্গাইল,সরকারি সাদাত কলেজ ১৯০৮ সালে ময়মনসিংহ সিটি কলেজ আনন্দ মোহন কলেজ নামে যাত্রা শুরু করে যার পুরো জায়গা দান করেন মৌলভী হামিদ উদ্দিন তবে কলেজের শিক্ষাপ্রদান কার্যক্রম শুরু হয় ১৯০৯ সালে। প্রতিষ্ঠাকালে আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্র ছিল মাত্র ১৭৮ জন ও শিক্ষক ছিলেন ৯ জন। কলেজটি ১৯৬৪ সালে সরকারিকরণ করা হয়।
বর্তমানে আনন্দ মোহন কলেজে ২২টি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক তিনটি বিষয়ে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করা হয়। সব মিলিয়ে এসব বিষয়ে প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। শিক্ষক রয়েছেন ২০৭ জন। কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল রয়েছে; ছাত্রদের জন্য ৬টি ও ছাত্রীদের জন্য ২টি হল। প্রায় ৫০,০০০ বই নিয়ে আছে সমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য মেডিকেল সেন্টার চালু করা হয়েছে | চালু করা হয়েছে ইন্টারনেট ক্যাফে।
৭.ইডেন মহিলা কলেজ,ঢাকা
ইডেন মহিলা কলেজ লালবাগের আজিমপুর এলাকায় ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইডেন মহিলা কলেজ হিসাবে যাত্রা শুরুর আগে ১৮৭৩ সালে ‘ইডেন স্কুল’ রূপে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কলেজটি ১৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। ইডেন গার্লস স্কুল ছিল বাংলায় মেয়েদের প্রথম স্কুল এবং ১৮৯৬ সালে এর ছাত্রী ছিল ১৩০ জন। সরকার এটিকে পূর্ববাংলা ও আসাম প্রদেশের উচ্চমান বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্কুলটি সাময়িকভাবে একটি বাড়িতে এবং কিছুদিন পর সদরঘাট এলাকায় পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের একটি বাণিজ্যিক ভবনে স্থানান্তরিত হয়। স্কুলটিতে ১৯২৬ সালে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়। সে থেকে এটি ইডেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ নাম ধারণ করে। শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের উদ্যোগে কলেজটি আবদুল গণি রোডে একটি ভবনে স্থানান্তরিত হয়। ভবনটি পরবর্তীকালে ইডেন বিল্ডিং নামে পরিচিত হয়। ১৯৪৭ সালে সরকার ইডেন বিল্ডিং-এ নতুন প্রাদেশিক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিলে কলেজটি কার্জন হলের একটি অংশে স্থানান্তরিত হয়। কলেজের সাথে কামরুন্নেছা স্কুলকে একীভূত করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কলেজটি আবার স্কুল চত্বরে স্থানান্তরিত হয়। অবশেষে ১৯৫৮ সালে ইডেন কলেজ ও কামরুন্নেছা স্কুলের কলেজ শাখা একীভূত হয়ে বকসীবাজারে ইডেন গার্লস কলেজে রূপান্তরিত হয়। প্রতিষ্ঠান দুটির স্কুল শাখা একীভূত করে কামরুন্নেসা স্কুল নামে টিকাটুলিতে চালু করা হয়।১৯৬২ সালে আজিমপুরে ১৮ একর জমির উপর গড়ে ওঠে ইডেন কলেজ। কলেজটি নতুন প্রাঙ্গণে স্নাতক কার্যক্রম চালু করে, কিন্তু এর উচ্চ মাধ্যমিক শাখা বকসীবাজারেই অব্যাহত থাকে। পর্যায়ক্রমে কলেজটির আজিমপুর শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক ক্লাস এবং বকসীবাজার শাখায় ডিগ্রি ক্লাস চালু হয়। পরবর্তী সময়ে বকশিবাজার শাখার নামকরণ হয় সরকারি বালিকা মহাবিদ্যালয়। এরই পরিবর্তিত নাম বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলজ। ১৯৬৩ সাল থেকে আজিমপুরের ইডেন কলেজ একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইডেন মহিলা কলেজ নামে পরিচালিত হয়।
৮.লালমাটিয়া মহিলা কলেজ,ঢাকা
১৯৬৬ সালে লালমাটিয়া মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক কোর্সের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পাস, সম্মান, মাস্টার্স প্রিলিমিনারি এবং ফাইনাল কোর্স রয়েছে এখানে।কলেজটির যাত্রা শুরু ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে, ১২ বিঘা জমির ওপর ভবন।এখন এর শিক্ষার্থী প্রায় সাত হাজার। শিক্ষক ১৩১ জন।কলেজটি ১৯৯১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ঢাকা মহানগরের শ্রেষ্ঠ শিক্ষালয়ের গৌরব অর্জন করেছে। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ র্যাংকিং-২০১৫ এ সমগ্র বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারী পর্যায়ের অনার্স ও মাস্টার্স কলেজের মধ্যে ১০ম এবং বেসরকারী কলেজের মধ্যে ২য় স্থান অধিকার করে। ঢাকা ময়মনসিংহ অঞ্চলের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করে দেশের অন্যতম সেরা পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং মহিলা কলেজগুলো মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
৯.ঢাকা কলেজ,ঢাকা
১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ই নভেম্বর তারিখে উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেব ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ একটি বড় সম্মান লাভ করে: সেবছর থেকে ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান ক্লাশ খোলা হয়, অর্থাৎ বিজ্ঞান বিষয়ক নতুন নতুন বিষয় পড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটা ছিলো একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন কেননা, এর মাধ্যমে পূর্ববাংলার তরুণদের মধ্যে আধুনিক যুগের হাতিয়ার, বিজ্ঞান বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা সম্ভব হয়ে ওঠে। বিজ্ঞান ক্লাশগুলো খোলার পর ঢাকা কলেজে ছাত্র ভর্তির হিড়িক পড়ে যায়। একই সঙ্গে এ কলেজের অবকাঠামোগত পরিবর্তনও হয়। এরপরও নানা ঘাতপ্রতিঘাত থাকলেও, ঢাকা কলেজ শিক্ষাক্ষেত্রে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছিলো, যার সোনালী ফসল ছিলো ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি। ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকা কলেজে পড়তে আসা ছাত্রদের তথ্য প্রথম পাওয়া যায় ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে। সেবছর কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায় যে, ১৫জন ছাত্র বিভিন্ন জেলা থেকে এসে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে ৭জন ফরিদপুর, ২জন বরিশাল, ২জন যশোহর, ২জন ময়মনসিংহ এবং এমনকি ২জন ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকেও এসেছে।[১৩] তবে তাসত্ত্বেও ঢাকা কলেজের বহিরাগত ছাত্রদের জন্য কোনো ধরনের ছাত্রাবাস ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। এ দীর্ঘ সময়ে ছাত্ররা তাই নানাবিধ কষ্টের মধ্যেই তাদের জীবন অতিবাহিত করে। যদিও ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় একটি ছাত্রাবাস স্থাপিত হয়, কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
১০.ঢাকা কর্মাস কলেজ
ঢাকা কমার্স কলেজ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত একটি উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর কলেজ। ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এটি ঢাকা মহানগরীর প্রথম কলেজ যা বাণিজ্য বিশেষত। শিক্ষার্থীরা বাংলা ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমেই শিক্ষা গ্রহণ করে। এই কলেজের মূল প্রতিষ্ঠাতা হলেন অধ্যাপক কাজী নুরুল ইসলাম ফারুকী। এই কলেজটি "ডিসিসি" নামেও পরিচিত। ২০১২ সালে ঢাকা কমার্স কলেজকে বাংলাদেশের সেরা বেসরকারী কলেজ হিসাবে ভূষিত করা হয়েছিল। ২০১৯–২০২০ সেশনে বিজ্ঞানের জন্যও উচ্চমাধ্যমিক কোর্স শুরু করা হয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিক কোর্সে ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে এস.এস.সি পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ -৩.৫০ থাকতে হয়। অনার্স কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি উভয় পরীক্ষায় গড়ে জিপিএ ৪.০০ থাকতে হয়। কলেজের দাপ্তরিক, একাডেমিক ও অন্যান্য সহায়ক কার্যক্রম সমূহ সম্পাদনের জন্য ২ টি সুবৃহৎ ভবন রয়েছে। এর মধ্যে একটি ভবন ১১ তলা বিশিষ্ট অপরটি ১২ তলা বিশিষ্ট। ১১ তলা ভবনটি পূর্ব পাশে অবস্থিত এবং এতে মোট রুম রয়েছে ৫০ টি। আর ১২ তলা ভবনটি দক্ষিণ পাশে অবস্থিত এবং এতে রুম রয়েছে ৭০ টি। কলেজের নিজস্ব অডিটোরিয়াম রয়েছে।কাজী ফারুকী অডিটোরিয়ামে প্রায় ১৬০০ টি আসন রয়েছে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য
#AMJAD HOSSAIN RAFSANJANI
ফেনী কলেজও অনেক পুরনো। ১৯২২ সালে স্থাপিত