কলাবাদুড়-Pteropus
কলাবাদুড় বা কলাবাদুর টেরোপাস গণভূক্ত বাদুড়জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণী। এ গণের বাদুড়গুলো পৃথিবীর বৃহত্তম বাদুড় হিসেবে চিহ্নিত। কলাবাদুড়ের কমপক্ষে ৬০টি প্রজাতি জীবিত রয়েছে।
ইংরেজি নাম: Flying foxes
বৈজ্ঞানিক নাম: Yinpterochiroptera
বর্ণনাঃ
কলাবাদুড়ের শরীরের ওজন ১২০-১,৬০০ গ্রাম। পুরুষরা সাধারণত মহিলাদের চেয়ে বড় হয়। এর ডানার বিস্তার ১.৫ মিটার পর্যন্ত এবং এটি ১.১ কেজি পর্যন্ত ওজন করতে পারে। নিচের দিকে লোমগুলো লম্বা এবং রেশমের ন্যায় মিহি হয়ে থাকে। কলাবাদুড়ের কোন লেজ নেই। মাথাটি ছোট্ট শেয়ালের ন্যায়, ছোট্ট চোখ ও বড় কান রয়েছে। স্ত্রীজাতীয় কলাবাদুড় এক জোড়া বাচ্চা প্রসব করে ও বুকের দিকে রাখে। পায়ের আঙ্গুলগুলো খুবই তীক্ষ্ণ ও বাঁকা ধরনের।
স্বভাবঃ
বিশ্রামকালে বাদুড়রা পেছনের পায়ের নখ দিয়ে আশ্রয় অাঁকড়ে অধোমুখে ঝুলে থাকে এবং তখন ভাঁজ করা ডানাগুলি শরীরের সঙ্গে সেঁধে থাকে বা শরীর ঢেকে রাখে। ফলগাছে খাবার খোঁজার সময় আঙ্গুলের নখগুলি বাদুড়কে ডালে উঠতে সাহায্য করে। সব বাদুড়ই নিশাচর বা গোধূলিচর, তবে কোন কোন কলাবাদুড় দিনের বেলাও ওড়ে।
প্রজননঃ
বাদুড়ের গর্ভধারণকাল ৩-৫ মাস এবং শীতের শেষ বা গ্রীষ্মের শুরুতে বাচ্চা প্রসব করে। এক কিস্তিতে একটি বাচ্চা জন্মানোই নিয়ম এবং বছরে একবারই মা বাদুড়ের প্রসব হয়। নবজাতক অন্ধ ও সাধারণত লোমবিহীন হয়ে জন্মায়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে শরীর খাটো ও সূক্ষ্ম রেশমি লোমে ঢাকা থাকে। জন্মের পরই বাচ্চাটি মায়ের দুটি স্তনের একটিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত হামাগুড়ি দেয় এবং স্তন্যপান না ছাড়া পর্যন্ত ওটা ধরে থাকে। সবগুলি দুধদাঁতই সমান আকারের এবং ভালভাবে স্তনের চুচুক অাঁকড়ে রাখার জন্যই ব্যবহূত হয়। সাবালক না হওয়া পর্যন্ত বাচ্চারা প্রথম ২-৩ মাস মায়ের শরীরেই সেঁধে থাকে।
খাদ্য তালিকাঃ
কলা, কুল, পেয়ারা, লিচু, গাব ইত্যাদি পাকা ফলজাতীয় খাবার খায়।
বিস্তৃতিঃ
কলাবাদুড় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও নাতিশীতোষ্ণমণ্ডল এলাকাভূক্ত এশিয়ার ভারতীয় উপমহাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপমালাসহ ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহে দেখা যায়।