রাম কোটা বা বড় কাঠবিড়ালি-Black Giant Squirrel
রাম কোটা বা বড় কাঠবিড়ালি যা বৃহৎ কাঠবিড়ালি নামেও পরিচিত Sciuridae পরিবারভুক্ত এক ধরনের স্তন্যপ্রায়ী প্রাণী।
বাংলা নাম: রাম কোটার পোশাকি নাম বড় কাঠবিড়ালি বা বড় কালো কাঠবিড়ালি বলা হয়।
ইংরেজি নাম: Black Giant Squirrel
বৈজ্ঞানিক নাম: Ratufa bicolor
বর্ণনাঃ
রাম কোটা লম্বায় এক মিটারের বেশি। মাথা-দেহ ৪২ সেন্টিমিটার ও লেজ ৬০ সেন্টিমিটার। ওজন প্রায় দুই কেজি। দেহের ওপরটা গাঢ় বাদামি থেকে কালো। গাল, গলা, বুক-পেট ও চার হাত-পায়ের ভেতরের দিকটা হালকা হলুদ বা সাদা। লম্বা ঝোপালো লেজটা কালো। কান দুটো বেশ বড় ও কালো। কানে গোছার মতো চুল থাকে।
স্বভাবঃ
রাম কোটা বৃক্ষবাসী প্রাণী। তাই সহজে মাটিতে নামে না। লাজুক এবং ভীতু ধরনের। দিনের বেলা সক্রিয় থাকে। সাধারণত একাকী থাকে, কখনোবা জোড়ায় দেখা যায়। উঁচু ও কাঁপা কাঁপা স্বরে ‘চুড-চুড-চুড’ স্বরে ডাকে।
প্রজননঃ
মার্চ-সেপ্টেম্বর প্রজননকাল। এরা বিভিন্ন গাছে একাধিক বাসা বানায়। পাতা ও ছোট ছোট কাঠি জড়ো করে বড় ও গোলগাল বাসা গড়ে। বাসার ভেতরে অন্দরমহলও থাকে। আর ঢোকার পথ থাকে এক পাশে। স্ত্রী রাম কোটা ৩২ দিন গর্ভধারণের পর প্রায় ৭৫ গ্রাম ওজন ও ২৩ সেন্টিমিটার লম্বা একটি বাচ্চার জন্ম দেয়। তবে কখনো দুটি বাচ্চাও হতে পারে। স্ত্রী বছরে দুবার বাচ্চা দেয়। বাচ্চারা প্রায় তিন বছর বয়সে যৌবনপ্রাপ্ত হয়। আবদ্ধাবস্থায় ১৯ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
খাদ্য তালিকাঃ
এদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের ফল, পাতা, অঙ্কুর ও গাছের ছাল খায়। ফলের বীজ ছড়িয়ে বংশবৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রাণীটির দেখা মেলে। চীন, নেপাল, ভারত,মায়ানমার, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া এই দেশগুলোতে রাম কোটাকে দেখতে পাওয়া যায়।
অবস্থাঃ
বিশ্বে এরা প্রায় বিপদগ্রস্ত বলে বিবেচিত। বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বেই দিনে দিনে এদের সংখ্যা কমছে। বন ধ্বংসের কারণে আবাস এলাকা কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। রাম কোটা আইইউসিএন লাল তালিকায় প্রায়-বিপদগ্রস্ত এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।