বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি-particolored flying squirrel
বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি হচ্ছে হিলোপিটিস গণের একটি ছোট উড়ন্ত কাঠবিড়ালী। চা বাগান এলাকায় এদের বিরচণ করতে দেখা যায়।
বাংলা নাম: ছোট উড়ন্ত কাঠবিড়ালি,বিচিত্ররঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি বা বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি।
ইংরেজি নাম: particolored flying squirrel
বৈজ্ঞানিক নাম: Hylopetes alboniger
বর্ণনাঃ
বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালির কান তুলনামূলকভাবে বড়, কানের গোড়া বাঁকানো নয়। এদের চ্যাপ্টা লেজ স্পষ্ট ডিস্টিকিউয়াস, লেজের নিচের পৃষ্ঠে খাটো চুল থাকে। পায়ের তলে সহায়ক কোনো প্যাড থাকে না। এদের কর্তন দাঁত ফ্যাকাসে হলুদ। পিলেজ মাঝারি ধরনের পুরু; দেহতল কালচে ধুসরাভ-বাদামি কিংবা লালচে-বাদামি ও পিঠ সাদা। পা ও লেজ কালচে বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্ক কাঠবিড়ালির পিঠ কালো ও দেহতল সাদা। এদের মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য ২৫-৩০ সেমি এবং লেজ ২৫-৩০ সেমি।
স্বভাবঃ
এরা মূলত নিশাচর, সন্ধ্যার সাথে সাথে বের হয়। দিনে গাছের কোঠরে বা গর্তে লুকিয়ে থাকে, আর গভীর রাতে বের হয়। এদের বৈশিষ্ট্য, এরা একদম পাখির মতো উড়ে না। গাছ দিয়ে উপরে উঠে এরা অন্য গাছে ডাইভিং করে। পাখি ডানা ঝাপটানো ছাড়াই যেভাবে বাতাসে ভেসে যায় ঠিক সেভাবে। এরা যখন লাফ দেয় তখন তাতে খুব গতি থাকে; গতি আর পায়ের চামড়ার প্রসারিত আবরণ তাকে বাতাসে ভাসিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এভাবে প্রায় দেড়শ’, দুশো ফুট দূরত্বে ছুটে যেতে পারে বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি।
প্রজননঃ
গাছের খোঁড়লে বাসা বানিয়ে সেখানে এরা ২-৩টি বাচ্চা প্রসব করে।
খাদ্য তালিকাঃ
রসালো ফলমূল,গাছের শিকড়, কুঁড়ি পাতা, পিঁপড়ার ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে।
বিস্তৃতিঃ
সিলেটের চিরসবুজ বন ও বান্দরবানের বনাঞ্চলগুলোতে কদাচিৎ দেখা মেলে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এদের দেখা যায়।
অবস্থাঃ
দেখতে সাধারণ কাঠবিড়ালির মতো হলেও এটি খুবই বিরল প্রাণী। বন ধ্বংস ও চোরাশিকারিদের কারণে এরা প্রায় বিলুপ্ত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন), বাংলাদেশ এর ‘লাল তালিকা’য় এই ছোট উড়ন্ত কাঠবিড়ালিটিকে ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ।