বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীসমূহ

বিভিন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মাংসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় তা শিকারীদের উৎসাহিত করছে। আর এতেই ঝুঁকিতে পড়ছে তাদের অস্তিত্ব।এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশ থেকে অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং আরও অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদ বিলুপ্তির পথে।

রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকার ঊষর লাল মাটিতে উনিশ শতকের শেষের দিকেও ঘুরে বেড়াত ধূসর হায়েনার দল। তবে এখন বরেন্দ্র তো বটেই, বাংলাদেশের কোথাও হায়েনা নেই। একসময় এ দেশে গন্ডারও ছিল। গত ১০০ বছরে বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে এমন ৩১ প্রজাতির প্রাণী।

গত ১৫ বছরে পাখি প্রজাতি সবচেয়ে বেশি বিলুপ্ত হয়েছে। দেশের ৫৬৬ প্রজাতির পাখির মধ্যে ১৯টি গত ১০০ বছরের বেশি সময়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্তির দৌড়ে দ্বিতীয় অবস্থান স্তন্যপায়ী প্রাণীদের। ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী হারিয়ে গেছে এই সময়ে। আর সরীসৃপজাতীয় প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে একটি।

১৮৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রামের দক্ষিণের কোনো এক স্থানে একে বন্দী করা হয়। স্থানীয়রা গন্ডারটিকে চোরাবালি থেকে তুলে প্রশাসনকে জানায়। ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন হুড ও মি. উইকস আটটি হাতির সাহায্য নিয়ে ১৬ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বেগমকে বন্দী করে। অর্থের লোভে ব্রিটিশ কর্মকর্তা দীর্ঘ দর-কষাকষির পর ১৮৭২ সালে গন্ডারটিকে পাঁচ হাজার পাউন্ডে লন্ডন চিড়িয়াখানায় বেচে দেয়। এই গন্ডারের বিদায়ের সাথে বিলুপ্ত হয় আমাদের গন্ডার প্রজাতি।

বিলুপ্ত প্রাণী

বিলুপ্ত প্রাণীর মধ্যে রয়েছে:  ডোরা কাটা হায়েনা,  ধূসর নেকড়ে, নীলগাই, বনগরু, বনমহিষ, গন্ডার, বারো শিঙা হরিণ, কৃষ্ণষাঁড়, মন্থর হরিণ, ভালুক,।

মহাবিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় রয়েছে:  রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হাতি, ভোঁদড়, লামচিতা, চিতা, বনরুই, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, বনগরু, সাম্বার হরিণ, প্যারাইল্লা বানর, হিমালয়ান ডোরা কাঠবিড়ালী ও কালো ভালুক,রামকুত্তা

বিলুপ্ত  পাখি

পাখির মধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে:  লালমুখ দাগিডানা, সারস পাখি, ধূসর মেটে তিতির ও বাদা তিতির পাখি, বাংলার বিখ্যাত বাদি হাঁস, গোলাপি হাঁস, বড় হাড়গিলা বা মদনটাক, ধলাপেট বক, সাদাফোঁটা গগন রেড, রাজ শকুন, দাগি বুক টিয়াঠুঁটি, লালমাথা টিয়াঠুঁটি, গাছ আঁচড়া, সবুজ ময়ূর চিরতরে এ দেশ থেকে হারিয়ে গেছে।

বিলুপ্ত  উভচর প্রাণী

উভচর প্রাণীদের তালিকা:  চামড়া ঝোলা ব্যাঙ এবং কেঁচোর মতো দেখতে নীল রঙের একটি নতুন উভচর প্রাণীও মহাবিপন্ন উভচর প্রাণীর তালিকায় উঠে এসেছে। বিপন্নের তালিকায় এসেছে চিত্রিত ব্যাঙ, বেলুন ব্যাঙ, চ্যাপ্টা মাথা ব্যাঙ, ঝরনা সুন্দরী ব্যাঙ, বড় গেছো ব্যাঙ, মিঠা পানির কুমির, ঘড়িয়াল, বিভিন্ন প্রজাতির কাছিম।

সরীসৃপজাতীয় প্রাণীর মধ্যে মিঠাপানির কুমির বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছে। বন্য পরিবেশ থেকে এটি অনেক আগেই হারিয়ে গেলেও বাগেরহাটের খানজাহান আলীর মাজারে দুটি মিঠাপানির কুমির ছিল। দুই বছর আগে এরা মারা গিয়ে এই প্রজাতিই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া পদ্মার চর ও দেশের বেশির ভাগ এলাকায় একসময় ঘড়িয়াল পাওয়া যেত।

বিলুপ্তির পর ফিরে এসেছে  মেটে তিতির


‘আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) প্রতিবেদনে ‘মেটে তিতির’ পাখিটিকে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি কুষ্টিয়ার গড়াই নদীসংলগ্ন হরিপুর চরে বিরল এ পাখিটির সন্ধান পেয়েছে ‘কিচির-মিচির’ সংগঠন। এতে পাখি প্রেমিকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।

মেটে তিতির অতি লাজুক পাখি। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর এদের প্রজনন মৌসুম। পুরুষ পাখি জোরালো কণ্ঠে ডেকে উঠে এলাকায় তার আধিপত্যের জানান দেয় এবং স্ত্রী-পাখিকে আকর্ষণ করে। জোড় বাঁধার পর ঘাস-পাতা দিয়ে তৈরি বাসায় সচরাচর ৮-৯টি ডিম পাড়ে, তবে একসঙ্গে ১৪টি পযর্ন্ত ডিমও কখনো বা দেখা গেছে। টানা ১৮-১৯ দিন ধরে ডিমে তা দেওয়ার কাজটি স্ত্রী পাখিই করে। পুরুষ পাখিও সেই সময়টা তার আশেপাশেই থাকে এবং বিপদ আসন্ন দেখলে ডেকে উঠে স্ত্রীটিকে সতর্ক করে দেয়। এদের প্রধান খাবার, ঘাসের ডগা, ঘাসবীজ ও পোকা-মাকড়।

ফাঁদ পেতে ধরা এবং আবাসস্থল ধ্বংসের কারণেই মূলত পাখিটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। তবে আশার কথা হল- লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা পদ্মা বিধৌত কিছু চরে অনুকূল আবাসস্থলের কারণে এখনও এরা টিকে রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিপদাপন্ন এ প্রজাতিটি সংরক্ষণের লক্ষ্যে সচেতন হওয়ার এখনই সময়।

বড় ইঁদুর-Greater bandicoot rat
মুখপোড়া হনুমান বা লালচে হনুমান-Capped langur
সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার আর নেই
২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে উকিল নোটিশ দিয়েছে রিজভীকে
করনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন এম এ হাশেম
বাংলাদেশের সেরা ১০ কোম্পানি ২০২৪
চিতা বিড়াল-Leopard Cat
রামকুত্তা-Dhole
ছোট ফইট্টা-lesser mouse-deer
এশিয় গন্ধগোকুল-Asian palm civet