বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর ১০ সাপ - 10 most poisonous snakes of Bangladesh
10 most poisonous snakes of Bangladesh

বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর ১০ সাপ - 10 most poisonous snakes of Bangladesh

বাংলাদেশে ৮০টি প্রজাতির সাপ রয়েছে বলে জানা যায়। সাপ ও সাপের বিষ নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থা বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির প্রধান অধ্যাপক এমএ ফায়েজ বলেন, দেশে যেসব সাপ রয়েছে, তার মধ্যে সাত থেকে আট প্রজাতির অত্যন্ত বিষধর সাপের কামড়ে মানুষ বেশি মারা যায়। সাপে কাটার ঘটনা গ্রামাঞ্চলে, এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট এলাকায় বেশি ঘটে থাকে। স্থলভূমিতে থাকা সাপ পায়ে বেশি দংশন করে। সামুদ্রিক সাপও অত্যন্ত বিষাক্ত হয়। বাংলাদেশে ২৩ ধরণের সামুদ্রিক সাপ রয়েছে, সেগুলো মাছ ধরতে সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের দংশন করে। তবে সমুদ্রের গভীরে তাদের অবস্থান হওয়ায় সাধারণত এই সাপের কামড়ের ঘটনা বিরল।

১.কেউটে সাপ

কেউটে বাংলাদেশের বিষধরদের প্রধান সাড়ির ক্ষ্যাপটে মারাত্মক বিষধর সাপ! বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা পড়ে কালকেউটের কামড়ে। বাংলাদেশের সর্বত্র এই সাপ পাওয়া যায়। দক্ষিণবঙ্গে কেউটে, বরিশালে কালিঞ্জিরি বা কালিজাইত, চট্টগ্রাম হানাস, উত্তরে জাতিসাপ নামের এই সাপ লম্বায় তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়। কেউটে সাপ অন্যান্য ছোট সাপ খায়। এছাড়াও ব্যাঙ, বাদুড়, মুরগীর বাচ্চা, মাছ ইত্যাদিও কেউটের প্রিয় খাবার।

এরা জলে অথবা জলের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে। এরা খুব সুন্দর ফনা ধরে যাকে ভয়ংকর সুন্দরও বলা যায়। বাচ্চা কেউটের ফনা পটাটো চিপসের মতো লাগে। বন্ধুরা ভয়ঙ্কর কথা তো এই, বাচ্চা কেউটে প্রাপ্তবয়স্ক কেউটের চেয়ে তিনগুণ বেশি বিষাক্ত!

এদের বিষে অতিমাত্রায় নিউরোটক্সিন থাকায় কামড়ালে ও বিষ প্রয়োগ করলে মানুষ বাঁচানো প্রায় অসম্ভব। এরা ড্রাইবাইট খুবই কম দেয়। কেউটে প্রজাতির যে কয়টি সাপ বাংলাদেশে দেখা যায় এর প্রত্যেকটিই ভয়ংকর বিষধর প্রজাতির! প্রতিবছরই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এই সাপের কামড়ে শতশত মানুষের মৃত্যু হয়!

২.নায়া নায়া

এটি কোবরা বা গোখরা প্রজাতির সাপ, এর বৈজ্ঞানিক নাম নায়া নায়া। এটি স্থলভূমির সাপ, এটি ফণা তোলে এবং এর ফণায় চশমার মত দুইটি বলয় থাকে।

৩. নায়া কাউচিয়া

এটিও গোখরা প্রজাতির সাপ। স্থানীয়ভাবে একে জাতি সাপ বা জাত সাপও বলে থাকে। এই সাপটিকে জউরা নামেও ডাকা হয়। এ সাপ ফণা তোলে। এটি মূলত দেশের পূর্ব অংশ অর্থাৎ সিলেট, নোয়াখালী এলাকায় বেশি থাকে। দেশে যত সর্প দংশনের ঘটনা ঘটে, এর কামড়ে ঘটে সর্বোচ্চ।

৪. কিং কোবরা বা শঙ্খচূড়

একে রাজ গোখরা এবং পদ্ম গোখরাও বলা হয়। ভয়াবহ বিষধর এই শঙ্খচূড় অন্য গোখরার তুলনায় আকৃতিতে বেশ লম্বা। এর ফণায় অন্য গোখরার মতো চশমার মত বলয় থাকে না। শঙ্খচূড় বাংলাদেশ, ভুটান, বার্মা, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এসব দেশে বেশি দেখা যায়।

৫.কালোবলয়ী সামুদ্রিক কেউটে বা নীলমুখো কেউটে

কালো- বলয়ী সামুদ্রিক কেউটে Elapidae পরিবারের ঘাঁড়হীন মাথা চিকন স্থুল এই সাপটি বাংলাদেশের প্রবাল সামুদ্রিক অঞ্চলের সাপ। এই সাপ বাংলাদেশের অন্যতম বিষাক্ত সাপ। এরা খুবই শান্ত প্রকৃতির। এরা সাধারণত বেশিরভাগ সময়ই সমুদ্রের নিচে থাকে। এদের পাওয়া যায় প্রবাল সামুদ্রিক অঞ্চল সেন্ট মার্টিনের উষ্ণ জলে। ব্ল্যাক ব্যান্নেড সী ক্রেইট ইয়েলো গোটফিশের সাথে জোটবেঁধে মাছ শিকার করে। শিকারকে প্রথমে এক সোবলে প্যারালাইজড করে দেয়, প্যারালাইজড হলে শিকার সোজা গিলে ফেলে। এই সাপ এতটাই শান্ত যে, এখনো মানুষকে কামড়ানোর রেকর্ড নেই। তবে হ্যাঁ যখন এরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকে তখন বসিয়ে দিতে পারে নিউরোটক্সিন বিষ সমৃদ্ধ মারাত্মক মরণঘাতি কামড়! যে কামড়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভবলীলা সাঙ্গ হতে পারে যে কারোরই!

৬. ক্রেইট বা শঙ্খিনী

এই সাপকে শঙ্খিনী এবং শাঁকিনী সাপ নামেও ডাকা হয়। পৃথিবীতে ক্রেইট বা শঙ্খিনী জাতের সাপের মোট ৮টি প্রজাতি রয়েছে, এর মধ্যে ৫টি প্রজাতি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এই ক্রেইট জাতের সাপকে স্থানীয়ভাবে কেউটেও বলা হয়।এ সাপ বাড়ির আশপাশে বা লাকড়ির মধ্যে শুকনো জায়গায় থাকে।

৭.গোখরা

পদ্ম গোখরা, খয়ে গোখরা, খরিশ ইলপিডি গোত্রের একটি অতিপরিচিত সাপের নাম। কেউটের মতো সাপুড়েদের কাছে এদের বিস্তর দেখা যায়। এরা প্রধানত শুকনো এলাকা পছন্দ করে। বাড়ির কাছে ইটের পাঁজা, পুরোনো বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, গাছের কোটর ও ইঁদুরের গর্ত পেলে এরা সহজে সেখানে বসতি গড়ে। গোখড়ারই একটি সর্বজন পরিচিত উপপ্রজাতি খয়ে গোখড়া।

এরাও অত্যন্ত বিষধর! গোখড়া ভোরবেলা ও সন্ধ্যারাতে বেশি তৎপর থাকে। দিনের বেলায় তেমন বাইরেই আসে না। কেউটের মতো এরাও অন্যান্য সাপ খেতে পছন্দ করে। নিউরোটক্সিন বিষের অধিকারী গোখরা লম্বায় চার–পাঁচ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।

এরা কামড়ানোর পর দ্রুত হসপিটালে না নিলে ২-৩ ঘন্টার মধ্যে মৃত্যু অবধারিত! কিছুক্ষেত্রে হসপিটালে নিলেও কোন লাভ হয়না। এর কারণ হিসেবে বলা যায় ওঝার হাতুড়ে ঝারফুক। বাংলাদেশ ও ভারতের অধিকাংশ সাপের কামড়ে মৃত্যুর কারণ ওঝা-বদ্যি। এরাই সাপে কাটা রোগীকে ঝারফুক এর নামে মেরে ফেলে!

৮.কালো নাইজার

এটিও শঙ্খিনী জাতের সাপ এবং বাংলাদেশে প্রচুর সংখ্যায় রয়েছে এই সাপ। এটি চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল, নোয়াখালী এবং সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায় বেশি।

৯. চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার

চন্দ্রবোড়ার আরেক নাম উলুবোড়া। বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায়, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপটি প্রায় একশো বছর আগে বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, অর্থাৎ পরপর কয়েক দশকে এর কোন একটি সাপেরও দেখা মেলেনি। কিন্তু গত ১০/১২ বছর আগে থেকে আবার এই সাপে দংশনের ঘটনা ঘটার প্রমাণ দেখা যায়।

টক্সিকোলজি সোসাইটির অধ্যাপক ফায়েজ বলছিলেন, প্রথমে রাজশাহী অঞ্চলে এই সাপের অস্তিত্বের প্রমাণ মিললেও, এখন এই সাপ বেড়ে ক্রমে ফরিদপুর অঞ্চল পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এই সাপ হঠাৎ করে কেন আর কিভাবে ফেরত এসেছে, তা নিয়ে এখন বাংলাদেশে গবেষণা চলছে। এই সাপ কাটলে স্নায়ু অবশ হয়ে আসে, রক্ত জমাট বেধে যায়।

১০. সবুজ বোড়া

সবুজ বোড়া বা গ্রিন ভাইপার সাপকে স্থানীয়ভাবে গাল টাউয়া সাপও বলে। এর মাথার অংশ মোটা বলে এই নামকরণ। এই জাতের মোট ছয়টি প্রজাতি বাংলাদেশে দেখা যায়। এই সাপ সুন্দরবন এবং পাহাড়ি এলাকার জঙ্গলে থাকে বলে এটি মানুষের মুখে মাথায় এবং গায়ে দংশন করে।

কোচ উপজাতির পরিচিতি - Introduction to the Koch tribe
মেঘলা চিতা-Clouded Leopard
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বিমান ভাড়া-Fares from Dhaka to Chittagong
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আ’লীগ ১০টির বেশি সিট পাবে না: কাদের সিদ্দিকী
মুখোশধারী গন্ধগোকুল-Masked palm civet
এনজিও তালিকা নওগাঁ - List of NGOs Naogaon
বঙ্গবন্ধু-প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর-Bangabandhu Military Museum
নীলগাই-Blue Bull
ত্রিপুরা উপজাতির পরিচিতি - Introduction to Tripuri Tribes