বখতিয়ারের ঘোড়া-আল মাহমুদ

মাঝে মাঝে হৃদয় যুদ্ধের জন্য হাহাকার করে ওঠে

মনে হয় রক্তই সমাধান, বারুদই অন্তিম তৃপ্তি;

আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ, জেহাদ বলে জেগে উঠি।

জেগেই দেখি কৈশোর আমাকে ঘিরে ধরেছে।

যেন বালিশে মাথা রাখতে চায় না এ বালক,

যেন ফুৎকারে উড়িয়ে দেবে মশারি,

মাতৃস্তনের পাশে দু'চোখ কচলে উঠে দাঁড়াবে এখুনি;

বাইরে তার ঘোড়া অস্থির, বাতাসে কেশর কাঁপছে।

আর সময়ের গতির ওপর লাফিয়ে উঠেছে সে।

না, এখনও সে শিশু। মা তাকে ছেলে ভোলানো ছড়া শোনায়।

বলে, বালিশে মাথা রাখো তো বেটা। শোনো

বখতিয়ারের ঘোড়া আসছে।

আসছে আমাদের সতেরো সোয়ারি

হাতে নাংগা তলোয়ার।

মায়ের ছড়াগানে কৌতূহলী কানপাতে বালিশে

নিজের দিলের শব্দ বালিশের সিনার ভিতর।

সে ভাবে সে শুনতে পাচ্ছে ঘোড়দৌড়। বলে, কে মা বখতিয়ার?

আমি বখতিয়ারের ঘোড়া দেখবো।

মা পাখা ঘোরাতে ঘোরাতে হাসেন,

আল্লার সেপাই তিনি, দুঃখীদের রাজা।

যেখানে আজান দিতে ভয় পান মোমেনেরা,

আর মানুষ করে মানুষের পূজা,

সেখানেই আসেন তিনি। খিলজীদের শাদা ঘোড়ার সোয়ারি।

দ্যাখো দ্যাখো জালিম পালায় খিড়কি দিয়ে

দ্যাখো, দ্যাখো।

মায়ের কেচ্ছায় ঘুমিয়ে পড়ে বালক

তুলোর ভেতর অশ্বখুরের শব্দে স্বপ্ন তার

নিশেন ওড়ায়।

কোথায় সে বালক?

আজ আবার হৃদয়ে কেবল যুদ্ধের দামামা

মনে হয় রক্তেই ফয়সালা।

বারুদই বিচারক। আর

স্বপ্নের ভেতর জেহাদ জেহাদ বলে জেগে ওঠা।

কবিতা এমন – আল মাহমুদ
রবীন্দ্রনাথ – আল মাহমুদ
চরিত্র – তসলিমা নাসরিন
সময় – তসলিমা নাসরিন
রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহকে লেখা চিঠি - তসলিমা নাসরিন
গতকাল একদিন - নির্মলেন্দু গুণ
মানুষের হৃদয়ে ফুটেছি - নির্মলেন্দু গুণ
হাসানের জন্যে এলিজি - নির্মলেন্দু গুণ
প্রশ্নাবলী - নির্মলেন্দু গুণ
আবার আসিব ফিরে-কবি জীবনানন্দ দাস