একটি খোলা কবিতা - নির্মলেন্দু গুণ

আসুন আমরা আগুন সম্পর্কে বৃথা বাক্য

ব্যয় না করে একটি দিয়াশলাইয়ের কাঠি

জ্বালিয়ে দিয়ে বলিঃ ‘এই হচ্ছে প্রকৃত আগুন ।

মীটসেফ খোলা রেখে, বিড়ালকে উপদেশ দিয়ে

অযথা সময় নষ্ট ক’রে লাভ নেই, আসুন

আমরা মীটসেফের দরোজাটা বন্ধ করে দিই ।’


পুঁজিবাদী শোষণের পথ খোলা রেখে

সম্ভব নয় প্রকৃত মুক্তির স্বপ্ন দেখানো ।

ফুঁটো চৌবাচ্চায় জল থাকবার কথা নয়,

সে বেরিয়ে যাবেই; ওটাই জলের ধর্ম ।

আমাদের ধর্ম ভিন্ন হলেও টাকার ধর্ম একই ।


বুদ্ধিমান কৃষক তাই আগাছা উপড়ে ফেলে সময়মত,

নইলে তার কষ্ট-কর্ষিত জমিতে কি ফলতো ফসল?

পরগাছার আক্রমণ থেকে ফলবান বৃক্ষকে

রক্ষা করতে হয় পরগাছার গোড়া কেটে দিয়ে ।

রক্তচোষা জোঁকের মুখে দিতে হয় থুথু, অথবা চুন,

প্রচন্ড আঘাত ছাড়া

পৃথিবীতে কবে কোন দেয়ার ভেঙেছে?

পরশ্রমভোগী ধনিক শ্রেণীর সর্বনাশ ছাড়া দরিদ্রের

পুষ্টিসাধনের সংকল্প হচ্ছে চমৎকার অলীক কল্পনা ।


সুফল লাভ কি সম্ভব সুকর্ম ব্যতিরেকে?

কিংবা শস্য ভূমিকর্ষণ ছাড়া?

হাতুড়ে বৈদ্য গাংরিন সারাতে চান

ক্ষতস্থানে পুরনো ঘি মালিশ করে,

শিক্ষিত ডাক্তার পরামর্শ দেন অপারেশনের ।

তাতে কিছু রক্তপাত হয় বটে,

হয়তো কেটে ফেলতে হয় কোন প্রিয় অঙ্গ–

কিন্তু ব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য ওটা এমন কিছু নয় ।

এর কোনো সহজ বিকল্প নেই । এটাই নিয়ম ।


কথার ফুলঝুড়িতে চিড়ে ভিজানোর ব্যর্থ চেষ্টায়

সময় নষ্ট না করে আসুন আমরা জলের কথাই বলি ।

আক্রোশ - নির্মলেন্দু গুণ
স্মরণ - নির্মলেন্দু গুণ
বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বিষয়ক কবিতা - Poems on Bangabandhu and Independence
অবুঝের সমীকরণ – আল মাহমুদ
নোলক – আল মাহমুদ - Nolock – Al Mahmud
বউ - নির্মলেন্দু গুণ
স্বাধীনতা, উলঙ্গ কিশোর - নির্মলেন্দু গুণ
চরিত্র – তসলিমা নাসরিন
আবার যখনই দেখা হবে - নির্মলেন্দু গুণ
আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি - নির্মলেন্দু গুণ