কলার উপকারিতা

কলা বাংলাদেশের সর্বপ্রধান ফল।দেশের প্রায় প্রতিটি গৃহস্থলিতে দু-একটি কলাগাছ রয়েছে।কলা সারা বছরই পাওয়া যায়।এর ইংরেজি নাম।

আন্তর্জাতিক বানিজ্যে ফলসমূহের মধ্যে কলার স্থান সর্বোচ্চ।সারা পৃথিবীতে প্রায় একশ জাতের কলার চাষ হয়।বাংলাদেশে প্রধানত অমৃতসাগর,সবরি,চাঁপা,চিনি চাঁপা,সিঙ্গাপুরী,কবরী,এঁটেকলা ও আনাজী কলা বা কাঁচাকলা চাষ করা হয়।কলাগাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে-পাকা কলা,কাঁচাকলা,থোড় ও মোচা সবকিছুই খাওয়া যায়।এমনকি কলাপাতা খাওয়া না হলেও তা খাদ্যপাত্র হিসাবে ব্যবহ্রত হয়।

কলার পুষ্টিগুন:

আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় সকল পুষ্টি নউপাদানই কলায় পর্যাপ্ত পরিমানে বিদ্যমান রয়েছে।তাই পুষ্টিমূল্যের বিচারে একে সুষম খাদ্য বলা চলে।প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কলা,কাঁচা কলা,থোড় ও মোচাতে রয়েছে-

পুষ্টিপাকাকলাকাঁচাকলাকলার থোড়কলার মোচা
আমিষ৭গ্রাম২.৬গ্রাম০.৫গ্রাম১.৭গ্রাম
শর্করা২৫গ্রাম১৭.৩গ্রাম৯.৭গ্রাম৫.১গ্রাম
চর্বি০.৮গ্রাম০.৪গ্রাম০.৭গ্রাম০.১গ্রাম
খনিজ লবন০.৯৮গ্রাম১.০গ্রাম০.৬গ্রাম১.৩গ্রাম
ভিটামিন বি-১০.১০মিগ্রা০.০৯মিগ্রা০.০২মিগ্রা০.০৫মিগ্রা
ভিটামিন বি-২০.০৫ মিগ্রা০.০৬মিগ্রা০.০২মিগ্রা০.০১মিগ্রা
ভিটামিন সি২৪মিগ্রা৪মিগ্রা৭মিগ্রা১৬মিগ্রা
ক্যালসিয়াম১৩মিগ্রা১১মিগ্রা১০মিগ্র৩২মিগ্রা
ক্যারোটিন২৭মাইক্রোগ্রাম
খাদ্যশক্তি ১০৯কি.ক্যালরী
 ৮৩ কি.ক্যালরী৩৪কি.ক্যালরী

কলার রয়েছে প্রচুর পরিমানে আমিস,যা প্রানীর দৈহিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে খুবই ভ’মিকা রাখে।এর অভাবে াপুষ্টি দেকা দেয়।শর্করা প্রানীর দৈহিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।অতিরিকÍ শর্করা দেহে জমা থাকে এবং প্রয়োজনে দেহে তাপ ও শক্তির যোগান দেয়।চর্বি শর্করার মতই দেহে তাপ ওশক্তি উৎপাদন করো।এটি ত্বকের নীচে জমা থাকে ত্বকের মসৃনতা বাড়ায় এবং দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।


দেহের স্বাবাবিক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে খনিজ লবন গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখেইকছু কিছু খনিজ লবন দেহের বিভিন্ন অঙ্গ গঠনেও সাহায্য করে থাকে।ভিটামিন বি-১ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধন এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজন।খাবারে এর অভাবে বেরিবেরি রোগ হয়।

কলার উপকারিতা:

(১)হাড় গঠনে সহায়কঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য কলা একটি উপকারী ফল।

(২)পেট ফাঁপা সমাধানঃ কলা অ্যান্টাসিডের মত কাজ করে। অর্থাৎ কলা হজমে সহায়তা করে এবং পেট ফাঁপা সমস্যা সমাধান করে। এছাড়াও কলা পাকস্থলীতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে সহায়তা করে।

(৩)গ্যাসটিক দূর করেঃযারা নিয়মিত বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা প্রতিদিন একটি করে কলা খান ভরা পেটে। কলা বুক জ্বালা পোড়া কমায় এবং পাকস্থলীতে ক্ষতিকর এসিড হতে দেয় না।

(৪)দাঁত পরিস্কার করতে কলাঃপ্রায় দুই মিনিট ধরে কলার খোসা দাঁতের উপর ঘষলে এটি দাঁতের উপরে থাকা ময়লা ও দাগ দূর করে দাঁতকে সাদা করে তুলবে। মিনারেলে ভরপুর কলার খোসা দাঁতকে সাদা ঝকঝকে করে তুলতে পারে।

(৫)কলা মন ভালো করে দেয়। কলায় ট্রাইপটোফ্যান আছে যা সেরোটনিনে রূপান্তরিত হয়ে মন ভালো করে দিতে সাহায্য করে।

(৬)স্ট্রোক প্রতিরোধ করেঃ কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো। স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্যেও কলা উপকারী।

 (৭)শরীরে শক্তি যোগায়ঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরী আছে। তাই মাত্র একটি কলা খেলেই অনেক সময় পর্যন্ত সেটা শরীরে শক্তি যোগায়।

(৮)শরীরে শক্তির সঞ্চার করেঃঅতিরিক্ত জ্বর কিংবা হঠাৎ ওজন কমে গেলে শরীর দূর্বল হয়ে যায়। এসময়ে কলা খেলে শরীরে শক্তির সঞ্চার হবে এবং তাড়াতাড়ি দূর্বলতা কেটে যাবে।

(৯)রক্ত শূন্যতা দূর করেঃকলায় প্রচুর আয়রন আছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। ফলে যারা রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য কলা খুবই উপকারী একটি ফল।

(১০)কলায় ফ্যাটি এসিডের চেইন আছে যা ত্বকের কোষের জন্য ভালো এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই ফ্যাটি এসিড চেইন পুষ্টি গ্রহণ করতেও সাহায্য করে।

পাকা কলা সাধারনত টাটকা ফল হিসাবে খাওয়া হয়।খুব সামান্য পরিমানে কলা প্রক্রিয়াজাত করা হয়।বাংলাদেশে পিঠা তৈরিতে কলা ব্যবহার করা হয়।এছাড়াও আইসক্রিম তৈরিতে কলা ব্যবহার করা হয়।কাঁচাকলা এবং কলার থোড় ও মোচা প্রধানত সবজি হিসাবে খাওয়া হয়।সর্বোপরি কলাই একমাত্র ফল যা দেশের ধনী-দরিদ্র সকলেই কমবেশী খাওয়ার সুযোগ পায়।

চোখ ভালো রাখার সহজ উপায় - Easy way to keep your eyes healthy
কালোজিরার গুনাগুন
বিলিম্বি ফলের উপকারিতা ও গুণাগুণ
লাউয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা
শুষনি শাকের ২০ টি উপকারিতা
জাম্বুরা খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
ওলকপি এর উপকারিতা
মেদ ও ওজন কমানোর উপায়
পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার
ঘুমের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া