পানিফলের পুষ্টি ও ভেষজগুণ-water caltrop benefits
Water caltrop

পানিফল-Water caltrop

পানিতে জন্মে তাই বলা হয় পানিফল। বাংলাদেশের অপ্রচলিত ফলের মধ্যে একটি ফল হলো পানিফল। প্রাচীনকাল থেকে চীনে এ ফল চাষ হয়ে আসছে। আমাদের দেশেও পানিফলের চাষ শুরু হয়েছে। দেখতে অনেকটা সিঙ্গাড়ার মতো বলে লোকরা একে ডাকে সিঙ্গাড়াফল নামে। এটি একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ।

ইংরেজি নাম: Water chestnut

বৈজ্ঞানিক নাম: Trapa natans

বিস্তৃতি

চীন, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, ফিলিপাইন, আফ্রিকা এসব দেশে পানিফল আবাদ হয়।

পানিফলের উৎপাদন মৌসুম

জুন মাসের বৃষ্টি হলে চারা লাগানো হয়। তবে পানির ব্যবস্থা থাকলে অনেকে মে মাসেও চারা লাগান। বাংলা আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র আশ্বিন মাস পর্যন্ত চারা লাগানো যায়। মৌসুম শেষে পরিপক্ব ফল কোনো পুকুরে, পানিযুক্ত স্থানে, কিংবা কাদা পানিযুক্ত পাত্রে রেখে দেয়া হয়। কয়েক মাস পর ফল থেকে চারা গজায়। সে চারা পরে মৌসুমে মূল জমিতে লাগানো হয়। চারা লাগানোর ৬০ থেকে ৬৫ দিন পর ফুল আসে মানে অগ্রহায়ণ পৌষ মাসে। ফুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন পর ফল তোলার মতো পরিপক্ব হয়। ফলগুলো অনেক দিন পর্যন্ত অঙ্কুরোদগম সম্পন্ন থাকে। অবশ্য ২ বছরের মধ্যে অঙ্কুরোদগম হয়ে যায়। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত পানিফল পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে।

পানিফল খাদ্য হিসেবে ব্যবহার

পানিফল কাঁচা,সেদ্ধ ও রান্না করে খাওয়া যায়। চীনে বিভিন্ন সবজির সাথে মিশিয়ে সবজি রান্না করা হয়। বিভিন্ন দেশে পানিফল  দিয়ে তারা পিঠা কেক বিস্কুট তৈরি করে খায়, বাজারে বিক্রি করে।ঢাকার ফুটপাতের  ভ্রাম্যমান ফলের দোকান প্রায়শ দেখা যায়। তবে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এ ফর সম্পর্কে অজ্ঞ।

ফল

ভাদ্র মাস থেকে গাছে ফল আসা শুরু করে এবং পরিপক্ব হয়ে আশ্বিন-কার্তিক মাসে ফল বিক্রি শুরু হয়। ফলের রঙ লাল, নীলাভ সবুজ বা কালচে সবুজ। পুরু নরম খোসা ছাড়ালেই পাওয়া যায় হৃৎপিণ্ডকার বা ত্রিভূজাকৃতির নারম সাদা শাঁস। কাঁচা ফলের নরম শাঁস খেতে বেশ মজা। রসাল ও মিষ্টি মিষ্টি ভাব। গাছের শিকড় থাকে প্যাক বা কাদার মধ্যে, কা- থাকে জলে ডুবে, পাতা ফুল ও ফল ভাসে পানির উপরে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় দেশি ফল সমূহ

পানিফলের পুষ্টি ও ভেষজগুণে ভরপুর 

এ ফলে আছে আঁশ, রাইবোফ্লেবিন, ভিটামিন বি, পটাসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, আমিষ, ভিটামিন আছে। খাদ্য শক্তি আছে ৬৫ কিলোক্যালরি, জলীয় অংশ ৮৪.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৯ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ১.৬ গ্রাম, আমিষ ২.৫ গ্রাম, চর্বি ০.৯ গ্রাম, শর্করা ১১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মিলিগ্রাম।

ঔষধি গুণ:

(১)অ্যালার্জি দূর করে: পানিফলের শাঁস শুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও হাত পা ফোলা রোগ কমে যায়। 

(২)পেটব্যথা: উদরাময় ও তলপেটে ব্যথায় পানিফল খুবই উপকারী।

(৩)পোকায় কামড়: বিছাপোকা অন্যান্য পোকায় কামড় দিলে যদি জ্বালা পোড়া হয় তবে ক্ষতস্থানে কাঁচা পানিফল পিষে বা বেঁটে লাগালে দ্রুত ব্যথা দূর হয়।

(৪)পিত্তজনিত রোগনাশক ও রক্ত দাস্তবন্ধকারক। পানিফল প্রস্রাববর্ধক, শোথনাশক ও রুচিবর্ধক।

(৫)যকৃতের প্রদাহনাশক ও উদরাময় রোগ নিরাময়ক। এটি যৌন শক্তিবর্ধক ও ঋতুর আধিক্যজনিত সমস্যায় উপকারী।

(৬)বমিভাব, হজমের সমস্যা দূর করতে পানিফলের কোনো তুলনা হয় না।

(৭)ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে করতে সাহায্য করে।

(৮)রক্ত আমাশা বন্ধ করে।

আঁশফল বা কাঠ লিচু
আমলকির উপকারিতা
গোলমরিচের উপকারিতা
কুলেখারা পাতার ১৫টি উপকারিতা
জয়ন্তী বৃক্ষের ভেষজ গুণাগুণ
বোম্বাই মরিচের উপকারিতা
নখকুনি ভালো করার উপায়
মেয়েদের জন্য সেরা ১০টি বডি স্প্রে
কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায়
সব থেকে ভালো মেকআপ কোনটি-What is the best makeup?